আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রবল গণবিক্ষোভের জেরে ভারতের সঙ্গে কলম্বো বন্দর চুক্তি বাতিল করলো শ্রীলঙ্কা। ভারতের তরফে ওই বন্দরে বিনিয়োগ করার কথা ছিল আদানি গ্রুপের। কিন্তু কলম্বো বন্দরের বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় সে দেশের জনতা। ফলে বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হয়েছে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকারকে।
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে কলম্বো বন্দরের পূর্ব প্রান্তে একটি কন্টেনার টার্মিনাল গড়তে ভারত ও জাপানের সঙ্গে চুক্তি হয় শ্রীলঙ্কার। ভারতের তরফে ওই বন্দরে বিনিয়োগ করার কথা ছিল আদানি গ্রুপের। চুক্তি মাফিক বন্দরের টার্মিনালের ৪৯ শতাংশ মালিকানা ভারত ও জাপানের হাতে এবং বাকি ৫১ শতাংশ শ্রীলঙ্কার হাতে থাকবে বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু এতে বাদ সাধে প্রায় ২০টি শ্রমিক সংগঠন।
তারা সাফ জানিয়ে দেয়, কোনওভাবেই বন্দরকে বেসরকারি হাতে যেতে দেওয়া হবে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামতে হয় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষকেও। কিন্তু তার কথাতেও কাজ হয়নি। খোদ শাসকদল ও সরকারের অন্দরে এনিয়ে ফাটল দেখা দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে বন্দর চুক্তি বাতিল করে কলম্বো। এদিকে, আন্তর্জাতিক চুক্তিকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে 'ক্ষুব্ধ' ভারত।
নয়াদিল্লির চাপের মুখে শেষমেশ কলম্বো বন্দরের পশ্চিম প্রান্তে একটি কন্টেনার টার্মিনাল গড়তে ভারত ও জাপানের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বন্দর চুক্তি বাতিল হওয়ায় কূটনৈতিক মঞ্চে ধাক্কা খেয়েছে ভারত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। তবে এখনও দ্বীপরাষ্ট্রে নয়াদিল্লির প্রভাব যথেষ্ট বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ, কলম্বো বন্দরের অন্য প্রান্তে বিনিয়োগের জন্য ভারতকে জায়গা করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
বলে রাখা ভাল, ঋণের ফাঁদ বিছিয়ে ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কাকে অনেকটাই কবজা করে ফেলেছে চিন। সেই ঋণের পরিমাণ এতটাই বেশি যে রাজাপক্ষ সরকারের পক্ষে তা পরিশোধ করা অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে ঋণ শোধ করতে না পেরে ২০১৭ সালে হামবানটোটা বন্দর বেজিংয়ের এক সংস্থাকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিতে বাধ্য হয় কলম্বো।