বুধবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১, ০৭:১২:০৮

জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আটকে দিলো চীন

জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আটকে দিলো চীন

নিউজ ডেস্ক : মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আনা নিন্দা প্রস্তাব আটকে দিয়েছে চীন। মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসে কিন্তু চীন সমর্থন না করায় তারা কোন যৌথ বিবৃতি দিতে পারেনি। 

যৌথ বিবৃতি দিতে হলে চীনের সমর্থন দরকার কারণ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার কারণে ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে চীনের। বৈঠকের আগে মিয়ানমারে থাকা জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা নেয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। গত নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল সামরিক বাহিনী মেনে নিতে অসম্মতি জানানোর পর এই অভ্যুত্থান ঘটলো।

তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে, 'নির্বাচনের ফলে সু চির দলের জন্য বিপুল ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয়েছিল।' সোমবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেয় এবং অং সান সু চিসহ কয়েকশ শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করে। এরপর সেনা অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা কর্মকর্তারা একটি সুপ্রিম কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছে যা মন্ত্রীসভার উপরে থাকবে। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে প্রতিরোধ এবং বেসামরিক নাগরিকদের অসন্তোষ বাড়তে শুরু করেছে।

জাতিসংঘের পদক্ষেপে কেন বাধা দিল চীন : ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এলিয়ট প্রাসে-ফ্রিম্যান বিবিসিকে বলেন, 'গ্যাসলাইটিং বা পেছন থেকে নিয়ামক হিসেবে কাজ করার মতোই এই বৈদেশিক নীতির মাধ্যমে জেনারেলদেরকে চীন স্পষ্ট করে না হলেও জোরালো সমর্থনের আভাস দিচ্ছে।'

তিনি বলেন, ''চীন এমনভাবে আগাচ্ছে যে মনে হচ্ছে, এটা পুরোপুরি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় যাতে 'মন্ত্রীসভায় রদবদল' দেখা যাচ্ছে। অন্তত চীনের রাষ্ট্রীয় মাধ্যম এভাবেই বিষয়টিকে চিত্রিত করছে। যদিও জাতিসংঘের এই বিবৃতি তাৎক্ষনিকভাবে কোন ফল বয়ে আনবে না, তারপরও এটা 'আন্তর্জাতিক সুসংহত' প্রতিক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে। যা আপাতত আসছে না বলে মনে হচ্ছে।''

দ্য ডিপ্লোম্যাটের লেখক এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক সম্পাদক সেবাস্টিয়ান স্ট্রাংগিও বিবিসিকে বলেন, 'আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে চীনের সন্দেহ প্রবণতার সাথে তাদের বর্তমান অবস্থান খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ।' গত কয়েক দিন ধরে চীন বলে আসছে যে, নিষেধাজ্ঞা কিংবা আন্তর্জাতিক চাপ পুরো পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করবে। পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারকে দূরে ঠেলে রাখার বিষয়টি থেকে কৌশলগত ভাবে সুযোগ নেয় চীন। 

তার মানে এই নয় যে সেনা অভ্যুত্থানে চীন খুশি, বলেন সেবাস্টিয়ান স্ট্রাংগিও। তিনি বলেন, ''এনএলডির সাথে তাদের বেশ ভাল বন্দোবস্ত করা ছিল এবং অং সান সু চির সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য তারা অনেক বিনিয়োগও করেছে। সামরিক বাহিনীর ফিরে আসা মানে হচ্ছে চীনকে নতুন করে মিয়ানমারের এই প্রতিষ্ঠানটির সাথে কাজ করতে হবে। এরা ঐতিহাসিকভাবেই চীনের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান।''

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে