 
                                        
                                        
                                       
                                        
                                             
                                                                                    
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তিনি পশ্চিমবঙ্গর দাদা, তিনি মহাগুরু, আবার তিনি সুপারস্টার। আর এসব কিছুর ঊর্ধে তিনি মিঠুন চক্রবর্তী। আজ থেকে বলা যেতে পারে বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। ব্রিগেডের সভামঞ্চ থেকে এদিন বিজেপির দলীয় পতাকা হাতে তুলে নিয়ে তিনি জানান দিয়ে দিলেন, গেরুয়া শিবিরের তিনিও একজন।
এরপরই বঙ্গ রাজনীতিতে সমালোচনার মধ্যমণি হয়ে উঠতে শুরু করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। রাজনীতিতে দল বদলুদের তালিকায় উঠে আসতে শুরু করেছে তার নামও। আর মিঠুন যে দল বদলের ক্ষেত্রে অনেক বড়ো বড়ো রাজনীতিবিদের থেকে কম যান না তা তার অতীতের দিকে ফিরে তাকালেই বেশ স্পষ্ট। আগে গলায় লাল মাফলার ঝুলিয়ে মিঠুন চক্রবর্তী ছিলেন সিপিএমের অন্যতম প্রচারক। অবশ্য অনেকে মনে করেন, সেটাই ছিলো তার সবথেকে বড়ো পরিচয়।
কারণ, একটা সময়ে নকশাল আন্দোলনের শরিক ছিলেন কিশোর গৌরঙ্গ। এরপর তিনি মুম্বাইয়ে পা রেখে মিঠুন হয়ে উঠলেও বামপন্থার যে আগুন তার ভিতরে ছিলো তা বামেদের সঙ্গে সখ্যতার সময় কখনও সমালোচনার মুখে পড়েনি। রাজ্যে বাম জমানায় প্রয়াত বাম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর সঙ্গে তার সুসম্পর্কের কথা ছিলো সর্বজনবিদিত। এরপর ২০০৯ সালে সুভাষ চক্রবর্তীর প্রয়াণের পর বেলগাছিয়া পূর্ব কেন্দ্রে সুভাষ পত্নী রমলা চক্রবর্তীর হয়ে ভোট প্রচারেও দেখা গিয়েছিলো মিঠুন চক্রবর্তীকে।
যদিও মিঠুন সেই প্রচারে নেমেও পরাজিত হন রমলা চক্রবর্তী। এরপর ধীরে ধীরে পালটে যান মিঠুন। ২০১৪ সালে মিঠুনকে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই গাড়িতে। জোড়া ফুল পতাকার ভীড়ে মিশে সেই বছরেই মিঠুন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। তারপর তৃণমূলের হয়ে ভোট প্রচারের ময়দানেও দেখা যায় তাকে। তৃণমূলের জনারণ্য উদ্বেল করে তিনি ডায়ালগও ঝাড়েন, 'মারবো এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে'। কিন্তু এরপরেই তৃণমূলের সঙ্গেও ছন্দ পতন ঘটে মিঠুনের।
রাজ্যে একটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থার কেলেঙ্কারি বিতর্কে মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তার। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে দূরে সরে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকেও ইস্তাফা দেন তিনি। তারপর মনে করা হয়েছিলো, রাজনীতিতে হয়তো ঢের শিক্ষা হয়েছে মিঠুনের। তিনি আর হয়তো সক্রিয় রাজনীতির ময়দানে আর কখনই ফিরে আসবেন না। নিজের সেলিব্রিটি ভাবমূর্তিতেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেবেন। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে বাংলার বুকে তৃণমূলকে বড়োসড়ো ধাক্কা দেয় বিজেপি।
এরপর বাংলায় ক্রমশ শক্তি বাড়াতে শুরু করে গেরুয়া শিবির। আর বাংলাতে রঙ বদলের সম্ভাবনা উঁকি দিতেই সময়ের তালে মিশে মিঠুনও নৈকট্য বাড়িয়ে নেন বিজেপির সঙ্গে। আর ঠিক একুশের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যবাসীকে ফের চমক দিয়ে তিনি হাতে তুলে নিলেন বিজেপির পতাকা। ফলে রাজনীতিকদের মতো দল বদলের ধারাবাহিকতায় কোনও অংশে কম যাননি মিঠুন চক্রবর্তী। আর সেই কারণেই দল বদলুদের ভীড়ে আজ মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতে শুরু করেছে মিঠুন চক্রবর্তীর নামও।