সোমবার, ০৩ মে, ২০২১, ১২:৫০:৫১

মমতার জয়ের ছয় কারণ

মমতার জয়ের ছয় কারণ

এতদিন আলোচনা ছিল ভোটে কি হতে চলেছে, আর এবার পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর মুখে মুখে প্রশ্ন কেন এমন হলো? কিভাবে এমন হলো?

নেতারা যতই বড় হোক না কেন নির্বাচনে জেতা হারা মানুষের হাতে। আর পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এবার দুই হাত তুলে মমতাকে ভোট দিয়েছেন।

যদিও নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে বারবার এসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং জোর গলায় ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি এবার দুই শ'র বেশি আসন পাবে বাস্তবে দেখা গেল অন্য চিত্র।

মমতার পক্ষে এই যুদ্ধ সহজ ছিল না কারণ বিজেপি সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছিল এই যুদ্ধে। তাহলে মমতা জিতলেন কি করে সেটাই দেখে নেওয়া যাক :

১. মুসলিম ভোট : পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০% ভোটাররা মুসলিম এবং তাদের একটা বড় অংশ এতদিন কংগ্রেস এবং বাম দলগুলোকে সমর্থন করেছে। কিন্তু এবার সেই ভোটের প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি মমতার ঝুলিতে পড়ে গেছে। তার কারণ বিজেপি ধর্ম ব্যবহার করে ভোটারদের মধ্যে যেখানে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করছিল মমতা তখন সবাইকে নিজের সঙ্গে নিয়ে চলার আশ্বাস দিয়েছেন। বলতে দ্বিধা নেই মুসলিমরা মমতাকে শান্তির প্রতীক হিসেবে দেখেছেন।

২. মহিলাদের সমর্থন : মমতাকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কোনো দিন মহিলা-পুরুষ এই চোখে দেখেননি। কিন্তু এই বারের ভোটে মমতার আবির্ভাব হয়েছিল বাংলার মেয়ে হিসেবে। বিজেপি নেতারা প্রতি জনসভায় মমতাকে দিদি ও দিদি বলে ডাক দিয়ে যেভাবে অপদস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন তা পশ্চিমবঙ্গের মহিলাদের মনে হয়েছে মহিলাদের অপমান। তাই ভোট বেড়েছে মমতার মহিলাদের মধ্যে। তাছাড়া বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলাদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাদের মন জয় করেছেন মমতা।

৩. চেনা মুখের অভাব : নির্বাচন হচ্ছিল পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু বিজেপির রাজ্য স্তরের কোনো নেতার কোনো গুরুত্ব ছিল না বিজেপিতে। সব সিদ্ধান্ত দিল্লির নেতারা নিয়েছেন আর পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা থেকেছেন পিছনের সারিতে। তাছাড়া বিজেপির কোন মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা না দিয়ে নির্বাচনে আসে যার অর্থ বিজেপির কোনো মুখ ছিল না এই নির্বাচনে।

৪. বিজেপি বহিরাগত : অধিকাংশ জনসভায় যারা বিজেপির প্রধান বক্তা ছিলেন তারা হিন্দিতে ভাষণ দিতেন এবং অধিকাংশ মানুষ তা বুঝতে পারতেন না। এই হিন্দি সংস্কৃতি আধিক্যের কারণে মমতা বিজেপিকে বহিরাগতদের দল বলতে থাকেন এবং মানুষ তা বিশ্বাস করে।

৫. করোনা পরিস্থিতি : যদিও ভোট শুরু হয়েছে বিজেপির ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতির খেলা দিয়ে কিন্তু ভারতে যত করোনা পরিস্থিতি জটিল হয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে বিজেপির নেতাদের মিছিল করার প্রবণতা মানুষ ভালো চোখে নেননি।

৬. প্রশান্ত কিশোরের অবদান : এবারের ভোটে তৃণমূলের হয়ে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের অবদান স্বীকার করতেই হবে। দু'বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ফল খুবই খারাপ হয়েছিল এবং তখন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ দেয় তৃণমূল। গত দুই বছর পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রশান্তের টিমের ছেলেমেয়েরা তৃণমূলের পক্ষে এক অনুকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, যা তৃণমূলের পক্ষে মানুষকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে