আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীর শাসন ব্রিটিশ রাজত্বের চেয়েও খারাপ ছিল বলে জানিয়েছে দেশটির বিহার সরকারের ওয়েবসাইট। ফলে, রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়েছেন নীতীশের রাজ্য সরকারের জোট শরিক কংগ্রেস।
বিহার সরকারের ওয়েবসাইটে রাজ্যের ইতিহাস নিয়ে একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে জরুরি অবস্থার কথা। সেখানে স্পষ্টই জানানো হয়েছে, ইন্দিরা ও তাঁর ছেলে সঞ্জয়ের ‘স্বৈরতান্ত্রিক’ শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন একমাত্র জয়প্রকাশ নারায়ণ। তাই স্বাধীনতা আন্দোলনে জওহরলাল নেহরুর সতীর্থ জয়প্রকাশকে জরুরি অবস্থা জারির ঠিক আগে গ্রেফতার করেন ইন্দিরা। দিল্লির কাছে তিহাড় জেলে কুখ্যাত অপরাধীদের সঙ্গে স্থান পেয়েছিলেন তিনি। ওয়েবসাইটি আরও দাবি করেছে, চম্পারণে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর সঙ্গে ব্রিটিশ সরকার যে ব্যবহার করেছিল, জয়প্রকাশকে জেলে পোরা তার চেয়েও খারাপ। তবে শেষ পর্যন্ত জয়প্রকাশের আন্দোলনেই ইন্দিরা-রাজের পতন ঘটে। ভারতবাসীকে স্বৈরতন্ত্রের বদলে গণতন্ত্রকে বেছে নেওয়া এবং দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন তিনি।
ইতিহাস বলছে, জয়প্রকাশের আন্দোলনেরই ফসল বিহারের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও সরকারের তৃতীয় শরিক লালু প্রসাদ। রাজনীতির নিয়ম মেনে বিজেপিকে আটকাতে এ বার ইন্দিরার পুত্রবধু সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তাঁরা। সাধারণত জরুরি অবস্থা নিয়ে প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে যেতেই চায় কংগ্রেস। কিন্তু বিহার সরকারের ওয়েবসাইটে এমন তথ্য থাকায় চুপ করে থাকতে পারেনি সনিয়ার দল। বিহারের কংগ্রেস নেতা চন্দন যাদব সোজাসুজি বলেছেন, ‘আমাদের দল নিয়ে এমন কথা সহ্য করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।’ তবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী অশোক চৌধুরি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘অল্প দিন হল নয়া সরকার ক্ষমতায় এসেছে। ওয়েবসাইটের তথ্য নিয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আগের জমানার কিছু ভুল থেকে যেতেই পারে।’
জেডিইউ মুখপাত্র নীরজ কুমারের মতে, ‘সত্য সব সময়েই প্রকাশিত হওয়া উচিত। তবে ওয়েবসাইটে ঠিক কী আছে তা আমার মনে নেই।’ বিহার সরকারের এক শীর্ষ আমলা জানিয়েছেন, ওয়েবসাইটের তথ্য খতিয়ে দেখা হবে।
১১ জানুয়ারি ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস