আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংসারে হাসি মুখ দেখতে একজনের বাবা সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে দিনশেষে ঘরে ফেরেন। অন্যজনের বাবা ফসল তুলতে ঘাম ঝরান খেতেই। সেই শ্রমজীবীর বেটি এবং কৃষিজীবীর ছেলে চলল জাপানে। সায়েন্স কংগ্রেসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে তারা।
ভারতের ঝাড়খণ্ডের বুন্দুরে বাড়ি পনেরোর কিশোরী পুষ্পা কুমারীর। তার থেকে এক বছরের বড় অনিল সিং থাকে ঝাড়খণ্ডেরই রামগড়ে। কয়েকজনের সঙ্গে এ দুজনও জাপানের সায়েন্স কংগ্রেস 'সাকুরা' (Exchange Program in Science)-য় মনোনীত হয়েছে। জানা গেছে, আগামী মে মাসেই জাপান যাবে চাষির ব্যাটা আর শ্রমজীবীর বেটি!
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমন খবর জানা গেছে।
পুষ্পা কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। ভারতীয় শিশুদের অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা করার সহজ পথ দেখিয়েছে এই কিশোরী। সব শ্রেণির মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে একটি বেবিফুড তৈরি করেছে পুষ্পা।
যার নাম দেয়া হয়েছে বাল অমৃত। প্রতি কিলোতে খরচ মাত্র ৫৯ টাকা। শিশুদের বিকাশে জুরুরি সবরকম প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল এতে রয়েছে। বাজারচলতি যেকোনো বেবিফুডের থেকে এর দাম অনেকটাই কম। গম, সয়াবিন, আয়োডিন সল্ট, মটরশুটির মতো ১৫টি খাদ্য উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েছে এই বেবিফুড।
ঘটনা হলো, পুষ্পার বাবা সাধারণ একজন শ্রমিক। এগারো বছর বয়স পর্যন্ত মেয়েকে তিনি স্কুলেও পাঠাননি। ক্লাস সিক্সে প্রথম স্কুলে ভর্তি হয় সে। ২০১৫-এর ডিসেম্বরে আরো পাঁচজনের সঙ্গে আইআইটি দিল্লির ইনস্পায়ার অ্যাওয়ার্ড স্কিমের জন্য মনোনীত হয় সে। তার তৈরি বেবিফুড বাজারে আনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে HRD দপ্তর।
স্কুল শিক্ষা ও সাক্ষরতা মিশনের সচিব আরাধনা পটনায়েক জানান, আগে কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এই বেবিফুড দেয়া হবে। তারপর বাণিজ্যিকভাবে এটি বাজারে আসবে।
অনিল সিং এখন পড়ছে দশম শ্রেণিতে। টোপার পিন্দ্রা'স শ্রমিক হাইস্কুলের এই ছাত্র পরিত্যক্ত কয়লাখনির জন্য বিশেষ মডেল তৈরি করেছে। কয়লা তুলে নেয়ার পর সেই খনি কীভাবে ভরাট করা যাবে, সে বিষয়ে আলোকপাত করে অনিলও 'ইনস্পায়ার' পুরস্কার পায়।
১৬ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম