বুধবার, ১৮ মে, ২০২২, ১১:০১:২০

মানুষের মতো হোটেলে বসে খাবার খেলেন বাঁদর!

মানুষের মতো হোটেলে বসে খাবার খেলেন বাঁদর!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাছের ফল-মূল নয়, একেবারে হোটেলে টেবিলের উপর বসে জমিয়ে মাছ-ভাত খাচ্ছে বাঁদর। এটা কোনও গল্প বা সিনেমার দৃশ্য নয়, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের ধারে হোটেলে বাঁদরের বাঁদড়ামির এমনই ছবি ধরা পড়েছে। বাঁদরের মাছ-ভাত খাওয়ার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল। 

নেটিজেনদের কথায়, "এ তো আমিষভোজী বাঁদর!" শুধু তাই নয়, ওই হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফে খবর পেয়ে বন দফতরের কর্মীরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে এলেও আমিষভোজী সেই বাঁদরকে মাছ-ভাতের থালা থেকে সরানো যায়নি। ভাত, মাছ সহ একেবারে চেটে-পুটে মাছের ঝোল সাবাড় করার পরই খাবারের টেবিল ছাড়ে এই চারপেয়ী। 

তারপরেও বাঁদরটিকে ধরতে পারেননি বনকর্মীরা। তাঁদের একেবারে নাস্তানাবুদ করিয়ে, ঘাম ঝরিয়ে হোটেল ছেড়ে সকলের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যায় আমিষভোজী বাঁদরটি। আর হোটেল কর্মী থেকে ক্রেতা সহ বনকর্মীরাও কেবল দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে দেখেন বাঁদরের কীর্তি। কিছুই করতে পারেননি তাঁরা।

বাঁকুড়া- দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের  ধারে বড়জোড়ার বাঁধকানা এলাকার একটি হোটেলে মঙ্গলবার দুপুরে ক্রেতাদের ভিড় ভালোই ছিল। হঠাৎ করেই সেই হোটেলে ঢুকে পড়ে একটি আস্ত বাঁদর। 

হোটেলের মধ্যে বাঁদর ঢোকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ক্রেতা থেকে কর্মীরা। অধিকাংশ ক্রেতা-ই আতঙ্কে খাবারের থালা ফেলে বেরিয়ে যান। আর সেই সুযোগে বাঁদরটি একেবারে উঠে বসে খাবারের টেবিলে। তারপর ক্রেতাদের ফেলে যাওয়া থালায় পড়ে থাকা মাছ, ভাত সাবাড় করে মর্কটটি। 

একেবারে মানুষের মতোই মাছের কাঁটা বেছে-বেছে মুখে পোরে। ভাতের গ্রাসও মুখে তোলে। তারপর বাটিতে থাকা মাছের ঝোলও চেটেপুটে সাবাড় করে দেয়।

আর ক্রেতারা হোটেলের বাইরে দাঁড়িয়ে বাঁদরের কীর্তি দেখেন। শাকাহারী থেকে একেবারে আমিষভোজী হয়ে বাঁদরের মাছ-ভাত খাওয়ার বিরল দৃশ্যের ভিডিয়ো মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করে রাখার সুযোগ হাতছাড়া করেননি অনেকেই। 

মনে ভয় নিয়েও হোটেলের বাইরে দাঁড়িয়ে শাকাহারী থেকে আমিষভোজী হয়ে বাঁদরের বাঁদড়ামির দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করেন ক্রেতা থেকে শুরু করে পথচলতি মানুষজনও। তারপর সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে দেরি করেননি তাঁরা।

এদিকে, বাঁদরের ভাত-মাছ খাওয়া দেখে ঘাম ছুটে যায় হোটেলের মালিক থেকে কর্মীদের। বাঁদরটিকে বাগে আনতে না পারলে যে হোটেলের হাঁড়ির ভাতও থাকবে না, তা ভেবেই ঘাম ছোটে তাঁদের। দেরি না করে বন দফতরে খবর দেন হোটেলের মালিক। খবর পেয়েই অবশ্য ছুটে আসেন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু তাঁদের পক্ষেও বাঁদরটিকে বাগে আনা সম্ভব হয়নি।

পেটপুরে ভাত-মাছ খেয়ে বন দফতরের কর্মীদের বাঁদরটিকে ধরতে রীতিমতো নাকানি-চোবানি খেতে হয়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে বনকর্মীদের নাস্তানাবুদ করার পর বাঁদরটি একেবারে সকলের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। 

তবে বাঁদরটি সকলকে নাস্তানাবুদ করলেও কারোর উপর হামলা চালায়নি। বড়জোড়ার বনাধিকারিক ঋত্বিক দে বলেন, বাঁদরের আক্রমণে কেউ আহত হননি। বলেও তিনি জানিয়েছেন। 

তবে বাঁদরটি ওই এলাকাতেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফলে আবার বাঁদরটি হোটেলে হানা দেবে না তো! এমনই আশঙ্কায় ভীত ওই হোটেলের মালিক থেকে কর্মীরা। বাঁদরের হোটেলে ঢুকে মাছ-ভাত খাওয়ার ঘটনা এলাকাবাসীর মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।-এই সময়

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে