আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সরকারি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করার পর নার্সের চাকরি পেয়েছিলেন রেণু খাতুন। কিন্তু, তাঁর স্বামী কেতুগ্রামের যুবক শের মহম্মদ শেখ স্ত্রীর সাফল্য মোটেও ভালোভাবে দেখেনি। স্ত্রীর কব্জি কেটে দিয়েছিল সে।
এরপর নিজের হাত হারিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই কাতর আবেদন করেছিলেন রেণু। বলেছিলেন, "আমার চাকরিটা যেন থাকে। সরকার যেন আমার চাকরিটা বাতিল করে না দেয়।"
তাঁর সেই আবেদন রাখলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে তিনি বলেন, "কাটোয়ার মেয়েটিকে আমরা কাজে লাগাব। পূর্ব বর্ধমানে নন নার্সিং স্টাফ হিসেবে রেণু খাতুনের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নার্সিং গ্রেড এ থাকবেন। কিন্তু ও নার্সিংয়ের কাজ না করে অন্য কোনও কাজ করবেন। ওর হাতের চিকিৎসার ব্যবস্থা আমরা করব।"
বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে মমতা বলেন, "জিএনএম পাশ করেছেন রেণু। ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড তাঁকে পূর্ব বর্ধমানে রেকমেন্ড করেছে। স্টাফ নার্সের চাকরি পেয়েছিলেন। তাঁকে পূর্ব বর্ধমানে কাজে লাগানো হচ্ছে।
নার্সিং গ্রেড এ থাকার জন্য তাঁর বেতন ২৯ হাজার ৮০০ টাকাই থাকবে। তবে নার্সিং না করে সে অন্য কোনও কাজ করবে। ওই লেটারটা ইতিমধ্যেই ইস্যু করা হয়ে গিয়েছে।"
উল্লেখ্য, কেতুগ্রামে সরকারি চাকরি পাওয়া বধূর ডান হাতের কব্জি কাটার ঘটনায় আরও দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম থেকে আসরাফ আলি শেখ ও হাবিব শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ধৃতরা শের মহম্মদের সঙ্গে হাত কাটার ঘটনায় জড়িত ছিল। এমনকী, ধৃতরা শের মহম্মদের পূর্ব পরিচিত ছিল বলেই জানা গিয়েছে।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার রেণুর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল সে। ঘটনার প্রায় তিনদিন পর তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রথমে শের মহম্মদের বাবা এবং মাকে গ্রেফতার করা হয়। তারা এখনও জেল হেফাজতে রয়েছেন।
এরপর গ্রেফতার করা হয় শের মহম্মদকে। তাকেও পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হল আরও দু'জনকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের অভিযুক্ত জানিয়েছে স্ত্রী যাতে সরকারি চাকরি না করতে পারে তার জন্য ভাড়া করা লোক এনে হাত কেটে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল সে।
স্ত্রী যাতে সরকারি চাকরি না করতে পারে সেটাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।ভাড়া করা লোক এনে হাত কেটে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল সে। স্ত্রী যাতে সরকারি চাকরি না করতে পারে সেটাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। খু'ন নয়, সাংঘাতিক ভাবে জখ'ম করাই ছিল পরিকল্পনা। একইসঙ্গে জেরায় শেখের দাবি, সরকারি চাকরির নেশা ছেড়ে রেণু যাতে সংসারে মন দেন তাই তাঁর হাত কেটে নেওয়ার পরিকল্পনা।-এই সময়