আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এবার ১৩০০০ লোকের দাড়ি কেটে দিয়েছে তাজিকিস্তানের পুলিশ। এছাড়াও গত বছর সারা দেশজুড়ে মুসলিম ধর্মীয় পোশাক বিক্রি করে এমন ১৬০ টিরও বেশি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা এর কারণ হিসেবে বলেছে, ‘দেশকে বিদেশি প্রভাব মুক্ত করার পদক্ষেপ!’
দেশটির খাঠলন অঞ্চলের পুলিশ প্রধান বাহরম শরীফজাদা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মধ্য এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে আইন-শৃংখলা বাহিনী ১,৭০০ মহিলা এবং মেয়েদেরকে মাথায় কাপড় দেওয়া (হিজাব পরা) থেকে বিরত থাকতে রাজি করাতে সক্ষম হয়েছেন।
এটাকে উগ্রবাদ মোকাবেলার পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাজিকিস্তানের সেক্যুলার নেতৃত্ব দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশি আফগানিস্তান থেকে আসা উগ্রবাদ ঠেকাতে তৎপর।
বেসরকারি তথ্যমতে, প্রায় ২,০০০ এর বেশি তাজিক নাগরিক সিরিয়ার যুদ্ধে অংশ নিয়েছে।
গত সপ্তাহে দেশটির সংসদে আরব সংস্কৃতি যুক্ত ‘বিদেশি’ নাম এবং আত্মীয় ভাইবোনদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন বাতিলের জন্য ভোটের আয়োজন করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে এই আইনটি প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রহমান অনুমোদন করবেন।
রেডিও লিবার্টি জানায়, তিনি সেক্যুলারিজমের প্রসারে এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও তা পালনের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এর কারণ হিসেবে বলেছেন, এসব বিদেশি সংস্কৃতি যা তাজিকিস্তানের জন্য হুমকি।
গত সেপ্টেম্বরে তাজিকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট দেশের একমাত্র ইসলামিক রাজনৈতিক দলকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়। এ রায়ের পর মাসব্যাপী সহিংসতা শেষে ইসলামিক রেনেইসান্স পার্টি অফ তাজিকিস্তানকে সরকার ইসলামী উগ্রবাদী আখ্যায়িত করে।
ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৯৪ সাল থেকে তাজিকিস্তান শাসন করে আসা রহমান ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে থাকবেন।
গত ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক জারি করা এক আইনে প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারকে আমৃত্যু পর্যন্ত যাবতীয় আইনি ঝামেলা থেকে মুক্তি দিয়ে রহমানকে ‘জাতির নেতা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এবং পদবী হিসেবে দেওয়া হয়েছে ‘তাজিকিস্তানের শান্তি ও জাতীয় ঐক্যের প্রতিষ্ঠাতা।’
সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার দু’দশক পরেও দেশের প্রায় ৭.১ ভাগ লোক এখনো দরিদ্র এবং অসচ্ছলতার সাথে সংগ্রাম করছে। অধিকাংশ তাজিক মানুষ কাজ করলেও দেশটিকে এখনো রাশিয়ার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
সূত্র: আলজাজিরা
২১ জানুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ