এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত হিটলার নাকি জীবিত ছিলেন। এ রকমই একটি রিপোর্টে বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানা গেছে।
কোথায় ছিলেন তিনি?
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বার্লিন থেকে পালিয়ে গিয়ে হিটলার প্রথমে প্যারাগুয়ে যান। সেখান থেকে আর্জেন্টিনা হয়ে ব্রাজিলের একটি ছোট শহর মাটো গ্রোসোতে গা ঢাকা দেন।
এমনকী লোকে যাতে তাকে চিনতে না পারে সে কারণে নিজের নামও পরিবর্তন করে ফেলেন। নতুন নাম রাখেন অ্যাডল্ফ লাইপজিগ। যতদিন জীবিত ছিলেন শহরের স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তিনি ‘দ্য ওল্ড জার্মান’ নামেই পরিচিত ছিলেন।
দীর্ঘ বছর ধরে হিটলার সম্পর্কে একটি তথ্য প্রচলিত ছিল, তিনি নাকি ধরা পড়ার ভয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছিলেন। সময়টা ছিল ১৯৪৫-এর ৩০ এপ্রিলে।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এতদিন ধরে হিটলারের আত্মহত্যার যে গল্প উড়ে বেড়িয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা! এমনকী দাবিও করা হয়েছে, হিটলার ৯৫ বছর পর্যন্ত জীবিত ছিলেন।
হঠাৎ ওই শহরে কেন গিয়েছিলেন হিটলার?
ওই রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, হিটলার নাকি গুপ্ত ধনসম্পদের খোঁজেই ওই শহরে আসেন। তার গার্লফ্রেন্ড কাটিঙ্গার সঙ্গে সেখানে ছিলেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত।
মারা যাওয়ার ঠিক দু’বছর আগে অ্যাডল্ফ লাইপজিগের ছবির সঙ্গে হিটলারের ছবি খুঁটিয়ে দেখা হয়। তারপরই দাবি করা হয়, লাইপজিগ নামে ওই ব্যক্তিই আসলে অ্যাডল্ফ হিটলার।
উল্লেখ্য, ইতিহাস যা বলে উপরোক্ত বক্তব্য সমর্থনযোগ্য নয়। কেননা ইভা-হিটলারের অমর প্রেম কাহিনী অনুযায়ী বহু বছর আগেই বার্লিনে ‘ফুয়েরার বাংকারে’ তারা দু’জন একসঙ্গে আত্মহত্যা করে এ নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।
ইভার প্রতি হিটলারের ভালোবাসা ছিল অফুরন্ত। আর দশটি মানুষের মতো হিটলারেরও মন ও আবেগ ছিল। হয়তো ছিল ঘর বাঁধার স্বপ্নও।
ইভা ব্রাউনকে তিনি গভীরভাবে ভালোবাসতেন। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেল।
সোভিয়েত সেনারা এসে পৌঁছানোর আগে বার্লিনে ‘ফুয়েরার বাংকারে’ দু’জনে একসঙ্গে আত্মহত্যা করেন। পারিবারিক আপত্তি থাকায় তারা তাদের ১৭ বছরের অন্তরঙ্গ মুহূর্তকে বিয়েতে পরিপূর্ণতা দিতে পারেননি।
তবে একসময় তারা বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হয়েছিলেন যখন মৃত্যু ছিল তাদের কাছ থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টা দূরে। কোঁকড়ানো চুলের ইভা ছিলেন খুবই লাজুক।
হিটলার পরিশেষে জানতে পারলেন শত্রু বাহিনীর হাতে ঘেরাও হতে যাচ্ছেন। তবে হিটলার শত্রুদের হাতে ধরা দেবার মত লোক ছিলেন না, তার সিদ্ধান্ত আত্মহত্যা করবেন, নিজেকে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেবেন, তবুও শত্রুপক্ষের হাতে ধরা দেবেন না।
অবশেষে আত্মহত্যার মধ্যদিয়ে একটি বড়মাপের প্রেমও ঝরে পড়লো। ইভা ব্রাউন হিটলারকে কতটুকু ভালোবাসতেন এবং তার প্রতি ইভার ধারণা কত উঁচু ছিল তা তার উক্তি থেকেই বুঝা যায়।
ইভা মন্তব্য করতেন, যদি এমন হতো যে, ১০ হাজার লোকের জীবনের বিনিময়ে হিটলারকে রক্ষা করা সম্ভব তাহলে তাই হতো উত্তম। ভালোবাসা সত্যি অন্ধ! হিটলার তাকে সহমরণে যেতে নিষেধ করছিলেন।
কিন্তু ইভা স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। ইচ্ছে করলে তিনি বেঁচে থাকতে পারতেন। হিটলারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার জন্য একটি মূলধন। এ সম্পর্কের উপাখ্যান অবলম্বনে স্মৃতিচারণমূলক বই লিখে তিনি অঢেল অর্থোপার্জন করতে পারতেন। কিন্তু ইভা এ সংকীর্ণতার পরিচয় দেননি।
যেখানে দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ হিটলারকে ঘৃণা করেছে, শত্রু ভেবেছে সেখানে তিনি তাকে ভেবেছেন হৃদয়ের একান্ত মানুষ হিসেবে। তিনিই ছিলেন তার জীবনের শেষ ব্যক্তি।
২৬ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম