আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের মহারাষ্ট্রের একটি হিন্দু মন্দিরে নারীদের প্রবেশের অধিকারের প্রশ্নে সেখানে উত্তেজনা চলছে। মুম্বাই থেকে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার দূরে আহমেদনগর জেলার শনি শিঙ্গনাপুর মন্দির চত্বরে সম্প্রতি এক নারীর প্রবেশকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়।
চারশো বছরের ঐতিহ্য ভেঙে মন্দিরটির অন্দরমহলে প্রবেশ করেছিলেন এক নারী। এরপর উপাসনা স্থল ‘অপবিত্র’ করার অভিযোগ তুলে তুমুল ভৎর্সনা করা হয় তাকে। শুধু তাই নয়। পবিত্রতা ফিরিয়ে আনতে দুধ, তেল দিয়ে ধোয়া হয় মন্দির প্রাঙ্গণ।
কলকাতা থেকে বিবিসির সংবাদদাতা অমিতাভ ভট্টশালী জানান, গত নভেম্বরের ওই ঘটনার খবর সংবাদ মাধ্যমে আসার পর নতুন করে সরব হন প্রতিবাদীরা। ‘ভূমাতা রণরঙ্গিণী ব্রিগেড’ নামে স্বেচ্ছাসেবী ব্যানারের আওতায় একজোট হন তাঁরা। গতকাল বুধবার তিন শতাধিক নারী সমাজকর্মী আহমেদনগরের উদ্দেশে রওনা হন।
এদিকে তাদেরকে প্রতিহত করতে মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কমিটিও স্থানীয় দুই হাজার নারীকে পথে নামানোর হুঁশিয়ারি দেয়। পুলিশের সাথে হাতে হাত ধরে রাস্তা অবরোধ করে শিবসেনা, হিন্দুসেনার মহিলা কর্মী-সহ বহু স্থানীয় বাসিন্দা। পরে পুলিশের বাধা পেয়ে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় শুয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
এই প্রথমবারের মত মন্দিরটির পরিচালনা কমিটির প্রধান হয়েছেন একজন নারী। তবে একজন নারী হয়েও পরিচালনা কমিটির প্রধান আনিতা শেঠে নিজেও মনে করেন, মন্দিরের ভেতর নারীদের প্রবেশ করা উচিত নয়।
তার যুক্তি, দেবতার থেকে যে অনুরণন সৃষ্টি হয় তা নারীদের জন্য ক্ষতিকর। গ্রামের অন্য নারীদেরও একইরকম বিশ্বাস। দুদিন আগে যখন তি শতাধিক নারী সেখানে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন তখন পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় পুরুষদের সাথে নারীরাও তাদের বাধা দিতে জড়ো হন।
দক্ষিণ ভারতের বিখ্যাত হিন্দু তীর্থস্থান সবরিমালাতেও মেয়েদের প্রবেশের অধিকার নেই এবং এ বিষয়ে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে মামলাও করা হয়েছে। এদিকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীস জানিয়েছেন, হিন্দু রীতি পূজা-অর্চনার সময় নারী-পুরুষ বিভেদ করা যায় না।
তিনি নিজে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি দলের একজন নেতা। তিনি মনে করেন, নারী অধিকার কর্মী এবং মন্দিরের পূজারীদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই রীতি শেষ করা উচিত।
২৮ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই