আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দেশের সব পুরুষকে নাকি করতে হবে অন্তত দুটো বিয়ে। নির্দেশ অমান্য করলেই মিলবে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। এমনকী কোনও স্ত্রী যদি তাঁর স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে বাধা দেন, শাস্তি হবে তাঁরও। কয়েকদিন আগের এই খবরে চমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব।
গোটা পৃথিবী, বিশেষত, আফ্রিকার দেশগুলির সোশ্যাল মিডিয়া মেতে উঠেছিল এই খবরে। নাইজেরিয়া থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা, টুইটারে বহু পুরুষের সরাসরি ঘোষণা ‘‘যেতে চাই এরিট্রিয়া, চাই সে দেশের নাগরিকত্ব, নিদেন পক্ষে ভিসাটা জলদি পেলেও চলবে’’। ছড়িয়ে পরছিল সে দেশে ভিসার আবেদনের একের পর এক লিঙ্ক। এবার সেই সব পুরুষের আশায় সরাসরি জল ঢালল খোদ এরিট্রিয়া সরকার। সাফ জানান হল, সে দেশে পুরুষদের বাধ্যতামূলক পলিগ্যামিতে সরকারি স্বীকৃতির খবর সম্পূর্ণ মিথ্যে, নিছক গুজব মাত্র।
জানা যায়, খবরটি প্রথম প্রকাশিত হয় কেনিয়ার একটি নিউজ ওয়েবসাইট ‘ক্রেজি মনডে’-তে। এই ওয়েবসাইটটি ‘স্ক্যান্ডাল’ এবং ‘গসিপ’ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের জন্যই ‘বিখ্যাত’।
‘ক্রেজি মনডে’-র সূত্র ধরে একের পর ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে পরে এই খবর। আর তাতেই বেজায় চটেছে এরিট্রিয়া সরকার। সংবাদ মাধ্যমকে এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন ‘‘এমনকি আসমারা (এরিট্রিয়ার রাজধানী)-র রাস্তার এক পাগলও জানে এই খবর সম্পূর্ণ মিথ্যে।’’
এরিট্রিয়ায় পুরুষদের পলিগ্যামির সরকারি স্বীকৃতির কারণ হিসেবে একটি যুক্তিও খাড়া করা হয়েছিল কেনিয়ার ওই ওয়েবসাইটে। বলা হয়েছিল, ১৯৯৮ থেকে ২০০০ পর্যন্ত দু’বছর ইথিওপিয়ার সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলে এরিট্রিয়ার। যুদ্ধে মারা পড়েছিলেন বহু পুরুষ। সেই থেকেই দেশে নারীর অনুপাতে বেশ কমে যায় পুরুষের সংখ্যা। এই নারী-পুরুষ অনুপাতের যুক্তি দেখিয়েই নাকি সম্প্রতি জারি হয়েছে এই অদ্ভুত ফতোয়া।
আফ্রিকার ছোট্ট দেশ এরিট্রিয়ার জনসংখ্যা চৌষট্টি লক্ষেরও কিছু কম। এর এক দিকে সুদান আর ইথিওপিয়া, এক দিকে জিবুটি, এক দিকে লোহিত সাগর। ইথিওপিয়ার থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন এরিট্রিয়ার জন্ম হয় ১৯৯৩ সালে।
এরিট্রিয়ার তথ্য মন্ত্রী টুইট করে জানিয়েছেন ‘‘যে ভাবে কিছু মিডিয়া এই চরম মিথ্যে ছড়িয়েছে তা রীতিমত আতঙ্কের। মনে হচ্ছে কোনও অশুভ শক্তি এ সব ছড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এরিট্রিয়ার বদনাম করতে চাইছে।’’
২৯ জানুয়ারি ২০১৬ এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসএম/ডিআরএ