মঙ্গলবার, ২৭ জুন, ২০২৩, ১০:৫৩:২১

পুতিনের তুরুপের তাস এবার নেপালের নির্ভীক গোর্খারাই!

পুতিনের তুরুপের তাস এবার নেপালের নির্ভীক গোর্খারাই!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালের পর্বতময় প্রদেশে তাদের বাস। পাহাড়ি আবহাওয়া, প্রতিকূল পরি'স্থিতি, দু'র্গ'ম পথ হাতের তালুর মতো তাদের চেনা। এই দু'র্গ'মতা আর প্রতিকূলতাই গোর্খাদের দু'র্ধ'র্ষ করে তুলেছে।

নেপালের পার্বত্য এলাকার দুঃসাহসিক যো'দ্ধাদের নাম গোর্খা। যু'দ্ধই তাদের পেশা। বছরের পর বছর ধরে তারা নিজস্ব প্রাচীন পন্থায় যু'দ্ধ করে আসছেন। শুধু নেপাল নয়, অন্য দেশে যু'দ্ধের জন্যও গোর্খাদের ডাক পড়ে।

সম্প্রতি নেপালি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বেশ কিছু প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, নেপালি যুবকেরা দলে দলে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন। নেপালের দু'র্গ'ম পাহাড়ি এলাকা থেকে তরুণ গোর্খারা নাকি রাশিয়ায় যু'দ্ধ করতে যাচ্ছেন।

ই'উ'ক্রে'ন আ'ক্র'মণের পর সেনাবাহিনীকে আরও শ'ক্তিশালী করার লক্ষ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিদেশি যো'দ্ধাদের আহ্বান জানান। বলা হয়, রাশিয়ার হয়ে এক বছর যু'দ্ধ করলে বিদেশি সৈনিকেরা সপরিবারে রাশিয়ার স্থায়ী নাগরিকত্ব পাবেন।

নাগরিকত্বের লোভেই নাকি দলে দলে নেপালি যুবকেরা রাশিয়ায় চলে যাচ্ছেন। রাশিয়ার সেনায় বেতনের পরিকাঠামোও তাদের কাছে লোভনীয় ঠেকছে বলে দাবি করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে রাশিয়ান হিসাবে নিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতছানি।

ই'উক্রে'ন যু'দ্ধে পুতিনের তুরুপের তাস কি তবে এই নেপালিরাই? গোর্খাদের যু'দ্ধের প্রাচীন ইতিহাসে আস্থা রেখে পুতিন তাদের দলে টানছেন। মনে করা হচ্ছে, আগামী দিনে অন্য বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধেও এই যো'দ্ধাদের কাজে লাগাতে পারেন তিনি।

তবে নেপালের এই গোর্খারা রাশিয়া নয়, ব্রিটিশদের 'আবিষ্কার'। উনিশ শতকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নেপাল আ'ক্র'মণ করেছিল। নেপালের সঙ্গে যু'দ্ধে বহু প্রা'ণহা'নি হয়েছিল ব্রিটিশদের। বাধ্য হয়ে ১৮১৫ সালে নেপালের সঙ্গে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একটি যু'দ্ধবিরতি এবং শান্তি চুক্তি স্থাপন করে।

এই চুক্তির শর্তেই বলা ছিল, নেপাল থেকে গোর্খা যো'দ্ধাদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করতে পারবে ব্রিটেন। প্রথমে ব্রিটিশ ভারতের সেনায় গোর্খা রেজিমেন্ট ছিল। ভারতের স্বাধীনতার পর তা ব্রিটিশ সেনার অন্তর্ভুক্ত হয়।

আজও ব্রিটেনের সেনার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এই গোর্খারা। নেপাল থেকেই তাদের নিয়োগ করা হয়। ব্রিটেনে থেকে ব্রিটেনের হয়ে তারা যু'দ্ধ করেন। অবসরের পর আবার ফিরে আসেন মাতৃভূমিতে।

ব্রিটেনের হয়ে যু'দ্ধ করলেও গোর্খারা সে দেশের নাগরিকত্ব পান না। এমনকি, তাদের বেতন কাঠামো, পেনশন সাধারণ ব্রিটিশ সেনার তুলনায় কম। বেতন এবং পেনশনের বিবিধ দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে ল'ড়া'ই চালাচ্ছেন নেপালি গোর্খারা।

ব্রিটেনের অধীনস্ত গোর্খারা ইরাক এবং আফগানিস্তানের যু'দ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, বোর্নিয়ো, সাইপ্রাসের মতো দেশেও তাদের যু'দ্ধ করতে পাঠানো হয়। গোর্খারা বলেন, ‘‘কাপুরুষ হওয়ার চেয়ে যু'দ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দেওয়া অনেক বেশি গর্বের।’’

রাশিয়ান নাগরিকত্বের হাতছানিতে এই গোর্খাদের অনেকেই পুতিনের সেনায় যোগ দিচ্ছেন বলে খবর নেপালি সংবাদমাধ্যম সূত্রে। যদিও রাশিয়ায় অবস্থিত নেপালি দূতাবাসের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই সংক্রান্ত খবর নেই।

রাশিয়ার সেনায় যোগ দিতে গেলে ভাষার বাধা একটি বড় সমস্যা হয়ে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু তাও হয়নি। নেপালি তরুণেরা জানিয়েছেন, প্রথম দিকে রাশিয়ান ভাষা শিখতে বলা হলেও পরে সেই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে শুধু ইংরেজি জানলেই হবে। সূত্র: আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে