স্পোর্টস ডেস্ক: অধিনায়ক তামিম ইকবালের ফিটনেস ইস্যুতে গত কিছুদিন ধরেই বেশ আলোচনা ছিল। এত আলোচনা ভালোভাবে নেননি তিনি। তাই বৃহস্পতিবার হুট করেই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন। সেখানেই নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে তামিম বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালকের ম্যাচটি ছিল আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেকদিন ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।’
সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে যান তামিম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ক্রিকেটার বলেছেন, ‘আমি সব সময় বলেছি ক্রিকেট খেলেই বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে গিয়ে অনেক পরিস্থিতির মুখে পড়েছি, সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমার ছোট চাচার হাত ধরেই ক্রিকেটে এসেছি। যারা আমাকে এই পর্যায়ে আনতে ভূমকিা রেখেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
বুধবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে হারের পরই বড় কোনো সিদ্ধান্তের গুঞ্জন ভাসছিল। শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনই সত্যি হলো। তামিম ইকবাল অধিনাকত্বতো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। তাও আবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের ঠিক তিন মাস আগে!
এই ঘোষণার আগে বিসিবি কিংবা ক্রিকেট বোর্ডের কোন পরিচালকের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেননি তিনি। একান্ত ব্যক্তিগত উদ্যোগে তামিম এই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। গত পরশু সিরিজ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আনফিট হলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবেন বলে ঘোষণা দেন ওয়ানডে অধিনায়ক।
শতভাগ ফিট না হয়েও তামিমের ম্যাচ খেলার ঘোষণায় বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এবং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন৷ মাথার ওপর বিশাল চাপ নিয়ে বুধবার আফগানদের মুখোমুখি হয়ে ব্যর্থ হন তিনি।
সব কিছু মিলিয়ে বাস্তবতা তামিমের বিপক্ষেই। ফিটনেসহীন তামিমের আত্মবিশ্বাসও ছিল তলানীতে। বিশ্বকাপের মাত্র তিন মাস আগে অধিনায়কের এমন অবস্থা চাইবে না কোন দল। তামিম হয়তো বিষয়টি উপলব্ধি করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে তিনি শেষ করলেন দীর্ঘ ১৬ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ারের। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক এবং ওপেনার। সংবাদ সম্মেলনের শুরুর দিকে স্বতস্ফুর্ত থাকলেও একপর্যায়ে গলা ধরে আসে তামিম ইকবালের। তিনি কথাই বলতে পারছিলেন না। বারংবার তাকে মুখ নিচু করে চোখ মুছতে যায়।
অবসর নিয়ে তামিম জানান, আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলে ফেলেছেন তিনি। পুরো ক্যারিয়ারে সৎ থেকে খেলার চেষ্টা করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তামিম। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিজের সব কোচ, সতীর্থ ও সিনিয়র ক্রিকেটারদের ধন্যবাদ জানান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান ও সেঞ্চুরির অধিকারী তামিম ইকবাল।