আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বর্তমানে অ্যাটক কারাগারে বন্দি রয়েছেন। সেখান থেকে আইনজীবীদের বার্তা দিয়েছেন তিনি।
আকুতি করে ইমরান বলেছেন, তাকে মুক্ত করা হোক, তিনি কারাগারে থাকতে চান না। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দিন কয়েক আগে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান তার আইনজীবীদের বলেছেন, তিনি কারাগারে থাকতে চান না। পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এবং তার আইনি উপদেষ্টার মধ্যে বৈঠকের বিষয়ে অ্যাটক কারাগারের বেশ কয়েকটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
কারাগারের ওই সূত্রগুলো জিও নিউজকে জানিয়েছে, তোশাখানা মামলায় দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর কারাগারের ভেতরে ‘দুঃখজনক’ পরিস্থিতিতে বন্দি করে রাখায় ইমরান খান অসন্তুষ্ট ও উদ্বিগ্ন।
আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠকের সময় ইমরান যেসব কথা বলেছেন তার কিছু অংশ কারাগারের এসব সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের সময় ইমরান তার আইনজীবীকে বলেন, ‘আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও; আমি জেলে থাকতে চাই না।’
ইমরান খানের কৌঁসুলি নাঈম হায়দার পাঞ্জোথাকে সোমবার জেল কর্তৃপক্ষ সাবেক এই তারকা ক্রিকেটারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়। সেই অনুযায়ী পিটিআই চেয়ারম্যানের সঙ্গে তিনি দেখা করেন এবং পরে জানান, পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ‘সি-ক্যাটাগরির জেল সুবিধা’ প্রদান করে ‘দুঃখজনক’ পরিস্থিতিতে রাখা হচ্ছে।
কারাগারের সূত্রগুলো জানায়, নিজের আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে কারাগারের পরিবেশ নিয়ে তার উদ্বেগের কথা জানান পিটিআই চেয়ারম্যান। সেখানে দিনে ও রাতে মাছি ও পোকামাকড় তার সেল দখল করে রাখে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গত শনিবার তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যে রায় দেওয়া হয়, তার মূলে ছিল বিদেশিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত উপহারের তথ্য সঠিকভাবে না জানানো এবং রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি করে অর্জিত অর্থ তোশাখানায় জমা না দেওয়া।
এসব উপহারের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৪০ লাখ পাকিস্তানি রুপি, যা ৬ লাখ ৩৫ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ। তবে ইমরান খানের আইনজীবীরা তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া রায়কে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং বুধবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
ইমরান খান তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যদিও অতিরিক্ত ও দায়রা জজ হুমায়ুন দিলাওয়ার তার রায়ে উল্লেখ করেছেন, পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সম্পদের ভুল ঘোষণার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
নিজের ওই রায়ে বিচারক দিলাওয়ার পিটিআই প্রধানকে তিন বছরের কারাদণ্ড, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং ১ লাখ রুপি জরিমানা করেন। এছাড়া মামলার বিষয়ে ইমরান খানের একটি আবেদনও সেই সময় খারিজ করে দেন বিচারক। এরপর মঙ্গলবার ইমরান খানকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ইসলামাবাদের কাছেই একটি কারাগারে রাখা হয়েছে। তবে ইমরানকে অ্যাটক জেল থেকে আদিয়ালা জেলে স্থানান্তরের অনুরোধ জানিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) প্রধান বিচারপতি আমের ফারুকের কাছে আবেদন করেছে পিটিআই।