আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় কন্যাসন্তানের জন্ম নিলে আজো অনেকে ভালোভাবে নেয় না। এ জন্য অনেক ক্ষেত্রে নারীর ওপর নানা ধরণের অত্যাচারের খবরও পাওয়া যায়। আবার আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কত কন্যসন্তানকে জন্মমাত্রই মেরে ফেলার নির্মম ঘটনাও ঘটেছে। কারণ, কন্যাসন্তানদের মন্দ ভাগ্যের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা হয়। তবে এত খারাপ খবরের মধ্যেও এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান কেউ কেউ। তেমনি এম মায়ের কথা আমরা জানবো। তিনি সকল অবাঞ্ছিতের জন্য আঁচলল পেতে দিয়েছেন।
সারা ভারতে যখন লিঙ্গ নির্ধারণ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এতে কন্যাভ্রূণ হত্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ঠিক সেই মুহুর্তে বিবি পরকাশ কউরের উপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দেশটির গণমাধ্যম।
১৯৯৩ সালে কন্যাসন্তানদের রক্ষা করতে নয়, অনাথদের জন্য একটি ‘হোম’ চালু করেছিলেন তিনি। কিন্তু ঘটনাচক্রে দেখা গেল সমস্ত অনাথরাই আসলে কন্যাসন্তান। কাউকে তিনি কুড়িয়ে পেয়েছেন ডাস্টবিন থেকে। কাউকে রাস্তার পাশে ধুলো থেকে। তাঁদের পরম মমতায় লালান পালন করেছেন তিনি। যে সমস্ত কন্যাসন্তানদের বহু মা চাননি, আজ তিনিই তাঁদের মা হয়ে উঠেছেন। প্রায় ৬০ কন্যার জননী এখন তিনি।
কিন্তু এত জনের ভরণপোষণ, লালন পালনের চ্যালেঞ্জ তিনি সামলান কী করে? তা নিয়ে অবশ্য একটুও ভাবিত নন তিনি। দৃঢ় প্রত্যয়ে জানান, ‘সে তো উপরওয়ালার দায়িত্ব। যিনি এ দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনিই জানেন কীভাবে তা পালন করব৷ আজ পর্যন্ত যখন কোনও অসুবিধের মুখে পড়িনি, আশা করি, ভবিষ্যতেও কোনও সমস্যা হবে না৷ ভালো কাজে কখনও বাধা আসে না।’
এদেশে আজও যখন কন্যাসন্তানের ভ্রূণ পর্যন্ত হত্যার ঘটনা ঘটে, তখন বিবি প্রকাশ কউর এক ব্যতিক্রমী মানবতার মশাল জ্বালিয়ে রেখেছেন। অবাঞ্ছিতদের জন্য কোলই পেতে দিয়ে, সারা দেশের সামনে এক উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। সরকারী পদক্ষেপে এরকম একটি হোম কি তৈরি করা যেত না? হয়ত যেত। তিনি অতশত ভাবেননি। আজও ভাবেন না। আজ ২২ বছর ধরে শুধু আদরে কোলে তুলে নিয়ে চলেছেন তাঁর কন্যাসন্তানদের।
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস