আন্তর্জাতিক ডেস্ক :প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ এবং বিশ্বশক্তিগুলোর হুমকি উপেক্ষা করে ফের দূরপাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ং পঞ্চমবারের মতো এই ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা করলো। যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম। ফলে ঘুম হারাম হয়ে গেছে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং তাদের সামরিক মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের।
উত্তর কোরিয়া গতমাসে সফল পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটানোর পর এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর এলো। এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। নিউইয়র্কে এক জরুরী বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদ জানায় যে রকেট উৎক্ষেপণের বিষয়ে উত্তর কোরিয়ায় নতুনভাবে অবরোধ আরোপের প্রস্তাব গ্রহণ করবে সংস্থাটি।
যদিও উত্তর কোরিয়া দাবি করছে, কক্ষপথে পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট পাঠানোর জন্য এই রকেট নিক্ষেপ করেছে তারা, এর সাথে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই।
পরমাণু বিস্ফোরণের পরীক্ষার পর থেকেই আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। বলা হচ্ছে জাতিসংঘের আইন লংঘন করেছে দেশটি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতিসংঘের দূত ও’জুন বলেছেন বলেছেন, উত্তর কোরিয়াকে এটা বুঝিয়ে দিতে হবে যে পরমাণু ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে কোনও হেলাফেলা করলে চলবেনা তা নিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে ।
তারা বলেন, এ জন্যই দেশটির ওপর কঠোর অবরোধ আরোপ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের সম্প্রসারণ মেনে নেবেনা সেই স্পষ্ট বার্তাই নিরাপত্তা পরিষদ থেকে দেয়া হবে।
গত মাসেই পরমাণু শক্তির পরীক্ষা। তার পরে ক্ষিপ্ত আন্তর্জাতিক মহলের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না-করে এবা দূরপাল্লার রকেট উৎক্ষেপণ করল উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়াং-এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের সিদ্ধান্তে সহমত রাষ্ট্রসংঘ এবং একাধিক দেশ। তা সত্ত্বেও এই রকেট উৎক্ষেপণে পাল্টা বার্তার ইঙ্গিতই দেখছে সকলে।
আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট জন কেরি বলেছেন, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের উল্টো পথে হেঁটে এ কাজ করেছে উত্তর কোরিয়া। এই নিয়ে পরপর দু’বার উস্কানিমূলক আচরণ করল ওরা। এই সব কাজ কোরীয় অঞ্চল-সহ সামগ্রিকভাবে বিশ্বের শান্তির পরিপন্থী।
যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, উত্তর কোরিয়া উৎক্ষেপণের চেষ্টা করেছিল বটে। কিন্তু তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে উত্তর কোরিয়ার সোহে মহাকাশ কেন্দ্র থেকে রকেটটি ছোঁড়া হয়। দেশটি জানিয়েছে, রকেটটি দশ মিনিটের মাথায় কোয়াংমিয়ংসং নামে একটি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ে মহাকাশের কক্ষপথে প্রবেশ করে। এই রকেট নিক্ষেপ নেহাতই কক্ষপথে পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট পাঠানোর জন্য, এর সাথে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কোনো সম্পর্ক নেই।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস