আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এবার নিজ দেশেই প্রেসিডেন্টের গাড়িবহর চলাচলের রাস্তায় বিছানো হলো বিশালাকারের লাল গালিচা । একটি সামাজিক হাউজিং প্রজেক্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়া রাজপথে নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
প্রেসিডেন্ট প্যালেস থেকে অনুষ্ঠান স্থলের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। এই পুরো রাস্তাটিই বিশালাকারের লাল গালিচা দিয়ে মুড়িয়ে দেয়া হয়। মিশরের রাজধানী কায়রোর রাস্তায় স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি বিশাল গাড়িবহর নিয়ে যাত্রা শুরু করেন।
অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কিছুদিন যাবৎ সিসির সরকার ব্যয় সংকোচনের কথা বলছে এবং বিভিন্ন সরকারি খাতে প্রদেয় ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হয়েছে। জনগণকে ব্যয় সংকোচনের কথা বলে প্রেসিডেন্ট নিজে পুরো রাস্তা জুড়ে লাল গালিচা বিছিয়ে সরকারি সম্পদের যথেচ্ছ অপব্যবহার করছেন- এ ঘটনা পুরো মিশর জুড়ে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিসিকে নিয়ে হাসি-তামাশা ও উপহাস করা হচ্ছে। আরবিতে লাল গালিচাকে ট্রেন্ড বানিয়ে হ্যাসট্যাগ ব্যবহার করছেন মিশরীয়রা। স্থানীয় একটি পত্রিকা প্রথম পাতার পুরো পৃষ্ঠা জুড়ে এ খবর বেশ রসিয়ে ছাপিয়েছে।
মিশরের বিখ্যাত টিভি উপস্থাপক ইবরাহিম ইসা সম্পাদিত পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট লাল গালিচার ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের বলেন খরচ কমাও....কিভাবে পারেন?’
২০১৩ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিশরের ক্ষমতা দখলকারী সেনাশাসক জেনারেল সিসি মিশরের ভঙ্গুর অর্থনীতি উদ্ধারের জন্য কিছু কিছু খাতে সরকারি ভর্তুকি বন্ধ করে দিয়েছেন। ব্যয় কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন দেশের জনগণকে। কিন্তু এক্ষেত্রে নিজের প্রনীত নীতি নিজেই মানতে পারেননি তিনি।
তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘প্রতিদিন বিশুদ্ধ পানি সরবারহে রাষ্ট্রের প্রায় ৫১ লক্ষ ডলার খরচ হয়। এই খরচের সামান্য কিছু অংশ জনগণ বহন করে। কিন্তু এভাবে আর সম্ভব হচ্ছে না। রাষ্ট্র আর এই ব্যয় নির্বাহ করতে পারবে না’।
লাল গালিচা নিয়ে সিসিকে নিয়ে উপহাসের জবাবে নজিরবিহীনভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে সেনাবাহিনী। বিভিন্ন টকশোতে ব্রিগে: জেনারেল পর্যায়ের কর্মকর্তারা দাবি করেন, বিশাল এই গালিচাটি সিসি প্রশাসন ক্রয় করেনি। এটি তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে তারা জানান।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস