বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ০১:১৭:৪৬

স্বামী-স্ত্রীর এই দেন-দরবারের ঘটনায় হতবাক সবাই

স্বামী-স্ত্রীর এই দেন-দরবারের ঘটনায় হতবাক সবাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিয়ে, দুই অক্ষরের শব্দ মিল করিয়ে দেয় দু’জনকে। বনে যান স্বামী-স্ত্রী। শুরু হয় সংসার। শুরু হয় সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার পালা। একে অপরের নির্ভরতা হয়ে চলতে থাকে জীবন। এসব কিছুই ঠিকঠাক ছিলে এক স্বামী-স্ত্রীর জীবনে। কিন্তু বিচ্ছেদ হতেই পাল্টে গেলো দৃশ্যপট। শুরু হয় পাওরা নিয়ে দেনদরবার।

তবে সম্প্রতি এমন এক দেন-দরবারের ঘটনা সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। কারণ, এটি সম্পত্তি ও অর্থের কোন ভাগাভাগি নয়, স্ত্রীকে দান করা কিডনি ফেরত চেয়েছেন স্বামী। এক সময় স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে নিজের যে কিডনি দান করেছেন, বিচ্ছেদ হতেই সেটি ফেরত চেয়ে আদালতে আবেদন করেন স্বামী।

বিচ্ছেদ বা ডিভোর্স এখন খুব সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। এমনকি বিয়ের ৩০-৩৫ বছর পার হবার পরেও বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা উঠে আসছে। বিচ্ছেদের পর দাবি-দাওয়া তো আর এক কাহিনি। এটি যে তিক্ততার সব মাত্রা ছাড়াতে পারে, সেটি বিশ্বাস হতো না, যদি না এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসতো।

বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনের পরই স্বামী-স্ত্রী একে অপরের থেকে ক্ষতিপূরণ, অর্থ বা সন্তানের হেফাজত নিয়ে রশি টানাটানি শুরু হওয়া ঘটনা বিস্তর। তবে এমন ঘটনা একেবারে আলাদা। বিচ্ছেদের আবেদনের পর স্ত্রীর কাছে কিডনি চেয়ে বসলেন স্বামী। না হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে ১৫ লাখ ডলার।

এবার ঘটনা খুলেই বলা যাক। নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের বাসিন্দা রিচার্ড বাতিস্তা ১৯৯০ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন ডোনেলের সঙ্গে। তাদের ঘরে তিনটি সন্তানও রয়েছে। পেশায় চিকিৎসক রিচার্ড বাতিস্তা। তার দাবি, বহু দিন ধরেই ভুগছেন তাঁর স্ত্রী। আর সে কারণে তাঁদের সম্পর্কে ঘুণ ধরেছিল বহু বছর আগেই।

দুই দু’বার কিডনি প্রতিস্থাপন ব্যর্থ হবার পর ডোনেলের জীবন নিয়ে সংশয় তৈরি হলে বাতিস্তা সিদ্ধান্ত নেন, স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করার। ২০০১ সালে স্ত্রীকে কিডনি দান করেন তিনি। বলেন, আমার প্রথম অগ্রাধিকার ছিল স্ত্রীর জীবন বাঁচানো। সে যাত্রায় প্রাণে বাঁচেন ডোনেল। তবে সম্পর্কের উন্নতি হয়নি।

২০০৫ সালে ডোনেল বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন। এরপরই রেগেমেগে বাতিস্তা স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি ফেরত চেয়েছেন। অন্যথায় কিডনির মূল্যের সমতুল্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। তার এমন দাবির কথা শুনে অভিজ্ঞ আইনজীবীর মাথাও ঘুরে যায়। কি বললেন, আর কি বলবেন না, বুঝে উঠতে পারছিলেন না।

তবে বলার অপেক্ষা রাখে না, বিজ্ঞ বিচারপতি বাতিস্তার আবেদনে কোন সাড়াই দেয়নি। উল্টো বাতিল করে দিয়েছেন। ১০ পাতার সিদ্ধান্তে বাতিস্তার দাবি প্রত্যাখান করেছে শীর্ষ আদালত। আদালত রায়ে বলেছে, কিডনি দান উপহার স্বরূপ। তা ফেরত নেওয়া যায় না। এ ধরনের দাবিও গ্রহণযোগ্য নয়।

যুক্তরাষ্ট্রে, যখন কেউ একটি অঙ্গ দান করে তখন এটি আইনত একটি উপহার হিসাবে বিবেচিত হয়। অর্থের বিনিময়ে অঙ্গ বিক্রি ঠেকাতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ডনেলের অ্যাটর্নি, ডগলাস আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট। মানুষের অঙ্গ এমন কোনও পণ্য নয় যা কেনা বা বিক্রি করা যায়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে