বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪, ১০:৩৪:২২

ভারত যে সিদ্ধান্ত নিল পেঁয়াজ রফতানি নিয়ে

ভারত যে সিদ্ধান্ত নিল পেঁয়াজ রফতানি নিয়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করেছিল ভারত সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বলবৎ থাকার কথা ফের তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে। বরং, নিষেধাজ্ঞার এই মেয়াদ আরও বাড়তে পারে বলেও জানা গেছে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় স্থানীয় দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজার নিয়ন্ত্রণে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করে দেয়।

এর মধ্যে খাত সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছিলেন যে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হতে পারে। তবে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ভারত সরকার আবার স্পষ্ট জানিয়েছে যে পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা নির্ধারিত সময়সীমা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে। কেননা, তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশের বাজারে অতিপ্রয়োজনীয় এই নিত্যপণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এটির পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা।

এবিষয়ে সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) ভারতের কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি রোহিত কুমার সিং বলেছেন, পেঁয়াজ রফতানির ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়নি। এটি এখনও বহাল রয়েছে এবং এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা পরিবর্তন করা হয়নি। অভ্যন্তরীণ বাজারের ভোক্তাদের কাছে ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজের প্রাপত্য নিশ্চিত করাকেই সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে পিটিআই জানিয়েছে, নির্বাচানের আগে আগে ৩১ মার্চের পরেও নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ শীতকালে (রবি মৌসুম) বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে খাত সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছিলেন যে পণ্যটির ওপর রফতানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে ভারত। যার প্রভাবে ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশটির বৃহত্তম পাইকারি পেঁয়াজ বাজার লাসালগাঁওয়ে পেঁয়াজের দাম ৪০ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে প্রতি কুইন্টাল ১ হাজার ৮০০ রুপিতে দাঁড়ায়। যা ১৭ ফেব্রুয়ারি ছিল ১ হাজার ২৮০ রুপি।

এদিকে ২০২৩ সালে রবি মৌসুমে পেঁয়াজ উৎপাদনের ২২ দশমিক ৭ মিলিয়ন টনে পৌঁছাবে আশা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির ছাড়পত্রসহ কেস-বাই-কেস ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে জি নিউজ।

এর আগে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশে সরকারিভাবে পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।

পেঁয়াজ রফতানির অনুমতির বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক উদ্দেশে সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।

সে সময়ে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সরকারি পর্যায়ে এ পেঁয়াজ রফতানির সিদ্ধান্তটি বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, বাহরাইন ও মরিশাসের জন্য প্রযোজ্য হবে। এ বাণিজ্য শুধু সরকারিভাবেই সম্পাদন হবে।

এরই মধ্যে মহারাষ্ট্র সরকারও সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে জানায়, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের রাজ্য থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রফতানির অনুমোদন দিয়েছে। জানা গেছে, এর মধ্যে বাংলাদেশে রফতানি হবে ৫০ হাজার মেট্রিক টন।

সম্প্রতি বাংলাদেশের পরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভারত সফরে গিয়ে পেঁয়াজ-চিনিসহ প্রয়োজনীয় পণ্য রফতানি স্বাভাবিক করতে দিল্লিকে অনুরোধ জানান। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের জন্য একটি কোটা পদ্ধতি চালুরও প্রস্তাব দেন তিনি।

এর আগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘রমজানের আগেই বাজারে থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ও চিনি সরবরাহ করতে পারব।

আমরা ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও ১ লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদা দিয়েছি। আমরা ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও ৫০ হাজার মেট্রিক টন চিনির প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। কিন্তু আমরা প্রত্যাশা করছি, আমাদের চাহিদার পুরোটাই আমরা রোজার আগে নিয়ে আসতে পারব।’

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে