আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয় দেশটির অবিসংবাদিত নেতা মহাত্মা গান্ধীকে সেই উপাধিটি দিয়েছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু গুজরাট সরকারের দাবি, সেটি আসলে রবীন্দ্রনাথ নন, অন্যকেউ দিয়েছিলেন। এরপরেই হৈ চৈ শুরু হয়ে গেছে ভারতজুড়ে। তাহলে বহুল আলোচিত সেই উপাধিটি দিয়েছিলেন কে?
গুজরাট সরকার নিজের দাবির স্বপক্ষে প্রখ্যাত গান্ধী গবেষক নারায়ণ দেশাইয়ের একটি 'নোট' উদ্ধৃত করছে। যেখান থেকে জানা গেছে, সৌরাষ্ট্রের এক সাংবাদিক নাকি 'বাপু'কে তাঁর একটি প্রতিবদনে প্রথম 'মহাত্মা' বলে উল্লেখ করেন। গান্ধীকে প্রথম 'মহাত্মা' বলে সম্বোধন করা হয় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকাকালীন জেঠপুর থেকে লেখা একটি চিঠিতে। যদিও কোন সাংবাদিক বাপুকে 'মহাত্মা' বলে উল্লেখ করেছিলে, তাঁর নাম জানানো হয়নি।
কিন্তু হঠাৎ এই বিতর্ক উঠল কেন? বিতর্কের সূত্রপাত একটি চাকরির পরীক্ষার উত্তরপত্রকে ঘিরে। পরীক্ষাটি নেয় রাজকোট জেলা পঞ্চায়েত শিক্ষণ সমিতি। পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে- 'গান্ধীজিকে মহাত্মা উপাধি কে দেন?' চারটি অপশনের মধ্যে 'রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর' ছাড়াও ছিল 'এক অজ্ঞাত সাংবাদিক' বলে একটি অপশন।
এরপরই এক পরীক্ষার্থী সন্ধ্যা মেরু গুজরাট হাই কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করেন৷ তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েত শিক্ষণ সমিতি যে উত্তরকে 'ঠিক' বলে বিচার করছে সেটি আদতে ভুল। সন্ধ্যা মেরু নিজে লিখে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথই বাপুকে 'গান্ধী' উপাধি দেন।
কিন্তু 'রাজকোট জেলা পঞ্চায়েত সমিতি' গান্ধী গবেষক নারায়ণ দেশাইয়ের 'নোট' উদ্ধৃত করে আদালতকে জানায়- কবিগুরু নন, 'মহাত্মা' উপাধি বাপুকে দিয়েছিলেন এক সাংবাদিক। আদালত প্রশ্ন করে, দেশজুড়ে স্কুলে যা পড়ানো হয়, সাধারণ মানুষ সেটাকেই সঠিক বলে ধরে নেন। সরকারি আইনজীবীও বিচারকের যুক্তি মেনে নেন।
এরপরেই আদালত কড়া ভাষায় পঞ্চায়েত শিক্ষণ সমিতিকে জানিয়ে দেয়, প্রশাসনের উচিত চাকরির পরীক্ষার উত্তর নির্ভুল বাছা উচিত৷ চাকরির পরীক্ষার উত্তরপত্রে সঠিক উত্তর নিয়ে পরীক্ষার্থীদের কোনওরকম সংশয়ে রাখা উচিত নয়। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৭ ফেব্রুয়ারি।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস