আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রেমে পড়া যখন অপরাধ, সেই অপরাধের খেসারত দিতে হলো এক প্রেমিক জুটিকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলল তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন। মাথার চুল কেটে চুন-কালি মাখিয়ে, গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে দিল গ্রামবাসী।
ভালোবাসা দিবসে এভাবেই শাস্তি পেতে হলো এক আদিবাসী দম্পতিকে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে।
আট বছর আগে ভালোবেসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পরিমল এবং শীতলা। সন্দেশখালির আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের মাতবরদের চোখে এটাই চরম অপরাধ। আট বছর পর তারই শাস্তি পেতে হলো তাদের।
রোববারই বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি থানার গ্রামে ঝুপখালি ফিরেছিলেন দু’জন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নারী-পুরুষ সবাই মিলে মাথার চুল কেটে, চুন -কালি মাখিয়ে, গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন।
২০০৯ সালে আয়লার পরে চাষবাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শীতলার বাবা দিনমজুরের কাজ করতে তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন অন্য গ্রামে। একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে প্রতিবেশি পরিমল সরদারও গিয়েছিলেন তাদের সঙ্গেই।
সেখানে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। সম্পর্কের কথা জানাজানি হওয়ায় শীতলাকে নিয়ে বাড়ি চলে আসেন তার বাবা বিদেশ সর্দার। শীতলা-পরিমল অবশ্য একে অপরকে ভুলতে পারেননি। সবার অমতেই তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বিয়ে করেন।
কয়েকদিন পর গ্রামে ফিরে এলে তাদের নিয়ে সালিশি বসানো হয়। কিন্তু বিচারের আগেই আবার গ্রাম ছেড়ে পালান তারা। প্রায় ৮ বছর কেটে যায়। কিছুটা সাহস করে আবার তারা নিজেদের গ্রামে ফিরে আসেন।
কিন্তু পরিস্থিতি যে একেবারেই বদলায়নি, গ্রামে ফিরতেই তাদের পাহারায় রাখে গ্রামবাসী। এবারে আর পরিমল-শীতলা পালানোর সুযোগ পাননি। শাস্তি শেষে যন্ত্রণা নিয়ে গ্রাম ছাড়েন ওই দম্পতি।
১৫ ফেব্রুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম