আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের গুজরাট উপকূলে আরব সাগরের উত্তরে একটি গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাত বা শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকালেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ভারত ও পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ (পিএমডি) একটি সতর্ক সংকেত জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, গুজরাট উপকূলের কাছে সৃষ্ট একটি গভীর নিম্নচাপ গত ১২ ঘন্টা ধরে ধীরে ধীরে কচ্ছের রণের ওপর দিয়ে পশ্চিম/দক্ষিণপশ্চিমে সরে গেছে এবং এখন করাচির প্রায় ২৭০ কিলোমিটার পূর্ব/দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম/দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং বৃহস্পতিবার গভীর রাত বা শুক্রবার সকাল নাগাদ সিন্ধু উপকূলে উত্তর-পূর্ব আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।’
প্রায় একই কথা বলেছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগও (আইএমডি)। বৃহস্পতিবার সংস্থাটি বলেছে, শুক্রবার গুজরাট উপকূলে উত্তর আরব সাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ঘূর্ণিঝড়টির ভারতীয় উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম। কারণ সৌরাষ্ট্র-কচ্ছের রণের ওপর বিরাজমান গভীর নিম্নচাপ শুক্রবারের মধ্যে উত্তর আরব সাগরে সরে যাবে।
বৃহস্পতিবার সকালে আইএমডি এক বিবৃতিতে বলে, গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম দিকে সরে গেছে এবং ভূজের প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে, নালিয়া থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং পাকিস্তানের করাচি থেকে ২৭০কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে।
এটি পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার পর এর নাম হবে ‘আসনা’। নামটি পাকিস্তানের দেয়া। ১৯৬৪ সালের পর এটি হবে আগস্ট মাসে আরব সাগরে সৃষ্ট দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়।
আইএমডি-র নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য থেকে জানা যায় যে, আরব সাগরে উৎপন্ন নিম্নচাপ বা তাদের তীব্রতা ১৯৬১, ১৯৬৪ ও ২০২২ সালে রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু এগুলোর কোনোটিই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়নি। অন্যদিকে ১৯২৬, ১৯৪৪ ও ১৯৭৬ সালে স্থলভাগে থাকাকালীন নিম্নচাপগুলো ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছিল।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে একটি সাইক্লোনিক সার্কুলেশন অর্থাৎ ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমডি। সাইক্লোনিক সার্কুলেশনটি পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রতল থেকে ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এটি দক্ষিণের দিকে খানিকটা হেলে অবস্থান করছে। ঘূর্ণাবর্তটি নিম্নচাপে পরিণত হতে চলেছে।
এরপর আগামী দুদিনে এটি উত্তর ও উত্তর পশ্চিমদিকে অগ্রসর হবে। যা ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে এগিয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে এই নিম্নচাপের প্রভাব পড়বে বলেও জানানো হয়েছে। সূত্র: ডন ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস