বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৯:০২:১৬

বঙ্গোপসাগরে হাত দিয়েছে চীন, দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি

বঙ্গোপসাগরে হাত দিয়েছে চীন, দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা দাবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীন ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে উঠছে। এবার ভারত মহাসাগর ছেড়ে একেবারে বঙ্গোপসাগরে চলে এসেছে চীন। দ্বীপপুঞ্জের দিকে হাত বাড়িয়েছে প্রতিবেশি দেশটি। শুধু তাই নয়, দ্বীপপুঞ্জকে মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে তা নিজেদের এলাকা বলে দাবি করেছে বেইজিং। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সূত্রে এ খবর দিচ্ছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো।

ভারত মহাসাগরে নয়াদিল্লির প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকায় পাল্টা চাপ তৈরির করার চীন এই নতুন কৌশল নিয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।

গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সাবেক শীর্ষ কর্তা এবং ভারত সরকারের সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জয়দেব রানাড়ে জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে আন্দামান ও নিকোবরকে নিজেদের ম্যাপে দেখাতে শুরু করেছে চীন। রানাড়ে এখন ভারতের সেন্টার ফর চায়না অ্যানালিসিস অ্যান্ড স্ট্যাটেজি-র প্রধান। তাকে উদ্ধৃত করেই একাধিক সংবাদ সংস্থা বঙ্গোপসাগরে চীনা দাবির কথা জানিয়েছে।

ভারত মহাসাগরে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াইতে চীন-ভারত টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। দক্ষিণ চীন সাগরে ভারত ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছে বলেই চীন এই পাল্টা চাপের কৌশল নিয়েছে বলে ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত।

গত দেড় দশকে ভারতীয় নৌবাহিনীর ব্যাপক শক্তিবৃদ্ধি করে গোটা ভারত মহাসাগরে বেইজিংকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে শুরু করেছে নয়াদিল্লি। তার সঙ্গে ভারতীয় নৌবাহিনী ঢুকে পড়েছে দক্ষিণ চীন সাগরেও। গোটা দক্ষিণ চীন সাগরকেই নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে তার বিভিন্ন অংশে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে বেইজিং।

আমেরিকা, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের মতো ভারতও চীনের এই নীতির বিরুদ্ধে সরব। ভিয়েতনাম, ফিলিপন্স ও ব্রুনেইয়ের সঙ্গে চুক্তি করে দক্ষিণ চীন সাগরে ভারতীয় নৌবাহিনীর স্থায়ী উপস্থিতি নিশ্চিত করে ফেলেছে নয়াদিল্লি। তাই বেইজিং এবার ভারত মহাসাগরের বৃহত্তর জলসীমা ছেড়ে ভারতের একান্ত নিজস্ব বঙ্গোপসাগর দখলের নীরব হুঁশিয়ারি দিতে শুরু করেছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে এদেশের উপকূলে সোনাদিয়াতে বন্দর বানাচ্ছে চীন। কিন্তু, শুধুমাত্র সেই বন্দরের উপর নির্ভর করে বঙ্গোপসাগরে ভারতের একাধিপত্যকে নস্যাৎ করা সম্ভব নয়। সেই কারণেই  চীন আন্দামান-নিকোবর নিয়ে বিতর্ক তৈরি করতে চাইছে।

অরুণাচল আর লাদাখের কর্তৃত্ব ভারতের হাতে থাকলেও চীন এখনও ওই দুই অঞ্চলকে ভারতীয় এলাকা বলে স্বীকৃতি দেয় না। এ বার স্থলসীমা ছেড়ে জলসীমাতেও সেই বিতর্ক ছড়িয়ে দিতে চাইছে বেইজিং। আন্দামান-নিকোবরকে নিজেদের এলাকা বলে চিহ্নিত করে ভারতে চাপে ফেলতে চাইছে।

ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই আন্দামান-নিকোবরে কর্তৃত্ব ভারতীয়দের। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দখল নেয়। তাই চীনা মানচিত্রে আন্দামানের অন্তর্ভুক্তিকে উস্কানিমূলক আচরণ হিসেবেই দেখছে নয়াদিল্লি।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে