আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের একটি অভিজাত এলাকায় নতুন বাড়ি কিনেছিলেন সংখ্যালঘু এক মুসলিম চিকিৎসক পরিবার। কিন্তু উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদ শহরের সংখ্যাগুরু হিন্দু প্রতিবেশীদের তীব্র বিরোধিতার মুখে সেই বাড়িতে তারা উঠতেই পারেননি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
শুক্রবারের (৬ ডিসেম্বর) ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবেশীরা দাবি করেন, মোরাদাবাদ এলাকাটি হিন্দু অধ্যুষিত। যেখানে ৪০০-এর বেশি হিন্দু পরিবারের বসবাস। তাই তারা অন্য সম্প্রদায়ের কাউকে সেখানে থাকতে দিতে চান না। স্থানীয়দের প্রতিবাদের একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির হাতে আসা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মেঘা অরোরা নামে একজন প্রতিবেশীকে বলতে শোনা যায়, আমাদের মন্দিরের সামনে মুসলিম পরিবারকে থাকতে দেওয়া যায় না। এটি আমাদের নারীদের জন্যও একটি নিরাপত্তার প্রশ্ন আছে।
ওই বাড়িটির আগের মালিক ড. অশোক বাজাজ ক্ষোভ প্রকাশ জানিয়েছেন, এই ঘটনায় বোঝা যায়, আমাদের শহরের পরিবেশও বদলে যাচ্ছে। আমি কখনোই এমনটা আশা করিনি। তবে সমঝোতার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুসলিম দম্পতি ওই বাড়িটি এখন একটি হিন্দু পরিবারের কাছে পুনরায় বিক্রি করবেন।
এ ঘটনার বিষয়ে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও নীতিশাস্ত্রের অধ্যাপক তানভীর আইজাজ বলেছেন, ধর্মীয় মেরুকরণ এখন গ্রাম থেকে শহরেও শেকড় গাড়ছে। এটি সম্পূর্ণ সংবিধানবিরোধী এবং একটি মানুষের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষেরা বহু বছর ধরে বৈষম্যের শিকার। বিজেপি শাসনামলে এ ধরনের ঘটনা আরও বেড়েছে। মোরাদাবাদের এই ঘটনাটি কেবল একটি বাড়ি বিক্রি নয়, বরং ভারতে বাড়তে থাকা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ, যা সংবিধানের মৌলিক মূল্যবোধকেও চ্যালেঞ্জ করে বলে অভিযোগ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর।