সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০৮:৫৬:০৭

ভয়ে মোদীর কাছে নতজানু হলেন মমতা?

ভয়ে মোদীর কাছে নতজানু হলেন মমতা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আসন্ন বিধান সভা নির্বাচনে বিজিপ জোট গঠন করতে পারে। আর এ জোট কাজ করবে মমতা ঠেকাতে। এমন আভাস পেয়েই কি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায় ছুটে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে? এমন জল্পনা এখন অনেকের মাঝেই।

তবে মমতার দল তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী প্রথা মেনেই প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে এটাই সৌজন্য। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্কই নেই।’

রবিবারই ছত্তীসগঢ়ের একটি কর্মসূচি থেকে কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গৌড়ীয় মঠের শতর্বষ উদ্‌যাপনের সূচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সেই কর্মসূচি সেরে দিল্লি ফেরার আগে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায়। আলাদা করে বসা হয়নি। সেভাবে কোনও নির্দিষ্ট কথাও হয়নি তাদের। শুধুমাত্র বিমানে ওঠার মুখে টারম্যাকেই দু’জন মুখোমুখি হয়েছেন। সেখানেই কথা হয়েছে তাদের।

মমতা যখন প্রধানমন্ত্রীকে ‘আনুষ্ঠানিক বিদায়’ জানাতে গিয়েছিলেন সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সময় কম হলেও প্রধানমন্ত্রীর ঝোড়ো সফরে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাতের ‘রাজনৈতিক বার্তা’ রয়েছে।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বামেরা। এই পরিস্থিতিতেই মোদী ও মমতার সাক্ষাৎকে ‘তাত্পর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা।

তাদের ধারণা, বিজেপি কংগ্রেসকে ‘চাপে’ রাখতে চায়। আর মমতা চান সিপিএম-সহ বামেদের দুর্বল করতে। দলের এক নেতার মতে, ‘বিধানসভা ভোটের আগে দু’জনের (মোদী ও মমতা) লক্ষ্য প্রায় একই। তাই তাদের দু’জনের মধ্যে সৌজন্য বিনিময় রাজনীতিহীন হতে পারে না।’

এদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে মমতা বিমানবন্দরে পাঠিয়েছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদকে। মন্ত্রী সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চলে আসেন নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠানে। ওই মঞ্চে মমতার মন্ত্রী ফিরহাদকে বক্তৃতায় আলাদা করে সম্বোধনও করেন প্রধানমন্ত্রী।

আলাদা বৈঠকের সময় না-থাকলেও ‘ভাষাদিবসে’র অনুষ্ঠান থেকে একটু আগেই রওনা হয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মেয়র শোভনকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে মমতা নিউটাউনের ইকো পার্কে ছিলেন কিছুক্ষণ। সেখান থেকেই ৮ টা ৪০ মিনিট নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছন বিমানবন্দরে। তখনও প্রধানমন্ত্রী বাগবাজারের মঠ থেকে এসে পৌঁছননি। মিনিট দশেক পরে প্রধানমন্ত্রী আসেন বিমানবন্দরে। ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিও। প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে পৌঁছে গিয়েছেন রাজ্য বিজেপি’র প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিংহ-সহ একাধিক নেতা। সেখানে সকলের সঙ্গেই কথা বলেন মোদী।

এই সাক্ষাৎকেই ভোটের আগে আলোচনায় নিয়ে আসতে চাইছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। রাজ্য কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘জোট দেখে ভয় পেয়েছেন মমতা। তাই  প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাইছেন। নির্বাচন কমিশন কঠোর হলে রাজ্যে ভোটের ফল বিরুদ্ধে যেতে পারে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব থাকবে। সে সব অঙ্ক কষেই এই সৌজন্য!’ তৃণমূলের মহাসচিব অবশ্য বলেন, ‘জোট সম্পর্কে তৃণমূলের ভাবনা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন নেত্রী। আমরা ভোট লড়ব উন্নয়নের ভিত্তিতে।’  
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে