আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সরকারি সফরে চীন যাওয়ার কথা ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থ ও নগরবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের। তবে সেখানে তাকে যেতে দেওয়া হয়নি। এর বদলে যুক্তরাজ্যে থেকে তদন্তের মুখোমুখি হতে বলা হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাম ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “অর্থমন্ত্রী রাখায়েল রিভিসের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের চীন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি লন্ডনেই থাকবেন। এই সময়টায় তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ‘মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডের’ স্বতন্ত্র উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস তদন্ত করবেন যে, টিউলিপ ‘মন্ত্রিত্বের নীতি’ ভঙ্গন করেছেন কি না।
টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)।
দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি। টিউলিপ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের বসবাস করা একাধিক ফ্ল্যাট নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। গত শুক্রবার প্রকাশিত সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের খবরে বলা হয়, লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে টিউলিপের মালিকানায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
২০০৪ সালে তাকে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাটটি দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল তার। পরে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আরেক সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসের খবরে বলা হয়, লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড এলাকায় টিউলিপ সিদ্দিকের বোনকে বিনা মূল্যে আরেকটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন মঈন গনি নামের এক আইনজীবী।
তিনি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। হ্যাম্পস্টেডের ওই ফ্ল্যাটে একসময় বসবাস করেছিলেন টিউলিপ। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটে টিউলিপ ও তার পরিবারের বসবাসের খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়া বাংলাদেশে ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ, তার খালা শেখ হাসিনা, মা শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মাসে এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া বলেছে, লন্ডনের ফ্লাটের বিষয়টি প্রকাশের পর টিউলিপের ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হতে পারেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার পক্ষে কথা বলছেন। কিন্তু টিউলিপের পদত্যাগের দাবি জোরালো হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেছেন, “কীভাবে সম্পদ গড়েছেন সেটি টিউলিপের এখনই প্রকাশ করার সময়। তার খালার করা দুর্নীতি থেকে এই সম্পদের কোনো কিছু এসেছে কি না সেটি তদন্ত করা উচিত।”