আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টানা পাঁচ দিন ধরে দাবানলে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি। শহরের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত থেকে দাবানল তাণ্ডব চালাচ্ছে। গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় এই দাবানল।
প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাসের কারণে আরও ভয়ঙ্কর ও বিধ্বংসী হয়ে ওঠে ও দ্রুত ছড়িয়ে দাবানল। এতে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
তবে শুক্রবার থেকে ঝড়ো বাতাসের গতিবেগ কমে আসায় দমকল বাহিনী আগুনের ওপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ পেতে শুরু করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার থেকে একযোগে শুরু হওয়া ছয়টি দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির আশপাশের এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১১ জন মারা গেছে এবং প্রায় ১০ হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দাবানলে বাড়িঘর হারিয়েছেন লাখো মানুষ। কিন্তু লস অ্যাঞ্জেলসে এই দাবানলের মধ্যেই শুরু হয়েছে লুটপাট, যার ফলে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে সেখানে।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শুক্রবারের আগপর্যন্ত প্যালিসেইডস ও ইটনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার মাত্রা ছিল শূন্য শতাংশ। শত শত অগ্নিনির্বাপণকর্মী আকাশ ও মাটি থেকে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানোর পরও কয়েক দিন ধরে দাবানল ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। অবশেষে প্যালিসেইডসের আগুন ৮ শতাংশ এবং ইটনের আগুন ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদিও এরই মধ্যে দাবানলে এই দুই অঞ্চলের প্রায় ৩৪ হাজার একর পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা জানান, প্রায় এক লাখ ৫৩ হাজার মানুষ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং আরও এল লাখ ৬৬ হাজার ৮০০ জন মানুষকে যেকোন মুহুর্তে সরে যাওয়ার সতর্কতা দেয়া হয়েছে এবং সমস্ত অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচটি দাবানলের আগুন নেভাতে এখনও সংগ্রাম করছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। এসব দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেনটুরা কাউন্টিতে নজিরবিহীন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বেসরকারী পূর্বাভাসকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাকু ওয়েদার এই দাবানলে ১৩৫ বিলিয়ন থেকে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করেছে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, প্যালিসেইডসে ২০ হাজার একর এলাকা পুড়ে গেছে। অঞ্চলটির আগুন ৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ইটনের আগুন ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পুড়েছে ১৩ হাজার ৯৫৬ একর এলাকা। লিডিয়ায় ৩৯৫ একর পুড়েছে, নিয়ন্ত্রণে এসেছে ৭৫ শতাংশ আগুন। হার্স্ট অঞ্চলে ৭৭১ একর পুড়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে ৩৭ শতাংশ। আর কেনেথ অঞ্চলে ৩৫ শতাংশ আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নতুন করে আগুন ছড়ানো রোধ করতে সক্ষম হয়েছেন অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা। সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি