আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লিবিয়ার আল জাবিয়া শহরের উপকূলে একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। নৌকাটিতে কয়েকজন পাকিস্তানি নাগরিকসহ ৬৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিল। এর মধ্যে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম লিবিয়া রিভিউ ও পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
লিবিয়া রিভিউয়ের এক প্রতিবেদন মতে, গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) লিবিয়ার আল জাবিয়া শহরের মারসা দেলা বন্দরের কাছে নৌকাটি ডুবে যায়। দাতব্য সংস্থা রেড ক্রিসেন্ট দশ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। ওইদিন এক বিবৃতিতে মানবিক সংস্থাটি জানায়, জাবিয়া নিরাপত্তা অধিদফতর ও লিবিয়ার কোস্টগার্ডের এক অনুরোধে সাড়া দিয়ে তাদের একটি উদ্ধারকারী দল দশটি মৃতদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনার তিনদিন পর সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নৌকাডুবির খবর নিশ্চিত করেছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, লিবিয়ায় পাকিস্তানিসহ কয়েক ডজন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা ডুবে গেছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, নৌকার যাত্রীদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লিবিয়ায় পাকিস্তানি দূতাবাসের কর্মকর্তারা যাত্রীদের পরিচয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহে কাজ করছেন। মৃতদের পরিচয় শনাক্তে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি দল আল জাবিয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানানো হয়, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (সিএমইউ) সক্রিয় করা হয়েছে এবং যেকোনো সমস্যায় ০৫১-৯২০৭৮৮৭ হেল্পলাইনে যোগাযোগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে ত্রিপোলিতে পাকিস্তানি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কয়েকটি জরুরি টেলিফোন নম্বর দেয়া হয়েছে। নম্বরগুলো হলো-০৩০৫২১৮৫৮৮২ (হোয়াটসঅ্যাপ) নম্বর ও +২১৮৯১৩৮৭০৫৭৭ (সেলফোন) ও +২১৮৯১৬৪২৫৪৩৫ (হোয়াটসঅ্যাপ)।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতেই মৌরিতানিয়া থেকে স্পেন যাওয়ার পথে ৮৬ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ৬৬ জনই ছিলেন পাকিস্তানের নাগরিক। ওই ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ পাকিস্তানি প্রাণ হারান। উদ্ধার করা হয় ৩৬ জনকে।
এর আগে ২০২৪ সালের ১৩ই ও ১৪ই ডিসেম্বরের রাতের মধ্যে ৮০ জন পাকিস্তানি যাত্রী নিয়ে গ্রিসে ডুবে যায় একটি জাহাজ। উন্নত জীবনযাপনের আশায় ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ উপায়ে ইউরোপে যাওয়ার পথ বেছে নেন এসব ব্যক্তিরা। তাদের দুর্বলতার সুযোগ নেয় কিছু অসাধু মানবপাচারকারী।
তবে এসব মানবপাচারকারী ও এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আদেশ দিয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের প্রশাসন। এরপর থেকে ৩৫ জন কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি (এফআইএ) শীর্ষ দুই সদস্যকে ভিন্নপদে ও কয়েকজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে ধীর গতির কারণে সাবেক পরিচালক জেনারেল আহমেদ ইসহাক জাহাঙ্গীরকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।