আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অবৈধ সরকারের সমালোচনা করলে রাষ্ট্র ভেঙে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মিশরীয় স্বৈরশাসক আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। তাই তার কড়া হুঁশিয়ারি, যারা রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে চায় তাদেরকে পৃথিবীর ওপর থেকে সরিয়ে দেয়া হবে।
অর্থনৈতিক সঙ্কট, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মধ্যে সিসি এসব মন্তব্য করলেন।
সম্প্রতি মিশরে ৫৯৬ আসন বিশিষ্ট সংসদ গঠিত হয়েছে। তবে তাকে ‘রাবার স্ট্যাম্প’ সংসদ বলে সমালোচনা করছেন অনেকে। সিসি বলেন, মিশরের সমস্যার প্রতিকার তার জানা আছে।
বুধবার জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে এই স্বৈরশাসক সিসি বলেন, প্লিজ, আমি ছাড়া কারো কথা শুনবেন না। আমি ভীষণ সিরিয়াস। সাবধান হও। আমার ধৈর্য ও ভালো আচরণের সুযোগ নিয়ে কেউ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে চাইবা না।
তিনি বলেন, খোদার শপথ, কেউ এটা করার চেষ্টা করলে তাকে আমি পৃথিবীর ওপর থেকে সরিয়ে দেব। মিশরবাসীকে সাক্ষী রেখেই এটা বলছি আমি। তোমরা কি ভেবে দেখেছ যে তোমরা কি করছ? তোমরা কারা?
২০১৩ সালের জুলাইয়ে একটি নির্বাচিত সরকারকে বন্দুকের নলের মাথায় সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখলের পর মিশরে ইতিহাসের বর্বরতম শাসন চাপিয়ে দিয়েছেন সিসি। এখন সামান্যতম সমালোচনাও সহ্য করছে না তার সরকার।
মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে চরমভাবে হরণ করা হয়েছে। অন্যায়ভাবে আটক, নির্যাতন আর গুম নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গণতন্ত্রে উত্তরণের আশাও সুদূরপরাহত।
জাতির উদ্দেশে দুই ঘণ্টার ভাষণে সিসি বলেন, এখনো মুক্ত গণতন্ত্র চর্চা, সমালোচনা সহ্য করা এবং কর্মকর্তাদের বাদ দেয়ার মত সময় আসেনি।
সুয়েজ খাল সম্প্রসারণসহ কয়েকটি প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে সিসি দাবি করেন, গত দেড় বছরে যা অর্জিত হয়েছে তা গত ২০ বছরেও অর্জিত হয়নি।
ভাষণে সিসি প্রথমবারের মত স্বীকার করেন যে গত ৩১ অক্টোবর সিনাইয়ে ২২৪ আরোহী নিয়ে রুশ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে জঙ্গিদের হাত ছিল।
ইসলামিক স্টেট ওই হামলার দায় স্বীকার করে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াও বিমান ধ্বংসের জন্য জঙ্গিদের দায়ী করেছে। তবে সিসি এতোদিন এ দাবি নাকচ করে আসছিলেন। রুশ বিমানটি ধ্বংসের পর মিশরীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস