আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অনুদান প্রসঙ্গে আবারও দেশটিকে নিশানা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে নয়াদিল্লির কঠোর সমালোচনাও করেছেন তিনি।
মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অনেক সুযোগ-সুবিধা নেয় ভারত। বরং এখন ভারতের উচিত যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করা। এমনকি ট্রাম্প সেই প্রশ্নও তুলেছেন যে— কেন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে যখন দেশটি (ভারত) ইতোমধ্যেই আমেরিকান পণ্যের ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক থেকে উপকৃত হচ্ছে?
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এর আগে গত সপ্তাহে ভারতের ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৮২ কোটি রুপি) অনুদান বন্ধের কথা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। আন্তর্জাতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশকে অর্থসাহায্য করে থাকে উত্তর আমেরিকার এই দেশটি। আর আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) সেই অনুদান ভারতে দেওয়া হতো ভোটের হার বৃদ্ধি করার জন্য।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারতকে এই অর্থসাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, “ভারতকে তাদের নির্বাচনের জন্য আমরা এতো অর্থ কেন দেবো? বরং ওরা আমাদের সাহায্য করুক। সেটা কেমন হবে? ভারতের কোনও অর্থের প্রয়োজন নেই।”
এনডিটিভি বলছে, স্থানীয় সময় শনিবার রাজধানী ওয়াশিংটনে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) ভাষণ দেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, “ভারতকে তাদের নির্বাচনে সাহায্য করার জন্য আঠারো মিলিয়ন ডলার! কেন দিতে হবে? কেন আমরা শুধু পুরোনো কাগজের ব্যালটেই যাব না এবং তাদের সেই নির্বাচনের মাধ্যমেই তারা আমাদের সাহায্য করুক, তাই না? ভোটার আইডি। এটা কি ভালো হবে না? আমরা নির্বাচনের জন্য ভারতকে অর্থ দিচ্ছি। তাদের অর্থের প্রয়োজন নেই।”
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, “তারা (ভারত) আমাদের কাছ থেকে খুব ভালো সুযোগ-সুবিধা নেয়। ভারত হচ্ছে— বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশগুলোর একটি। আমরা কিছু (উৎপাদন) করার চেষ্টা করি এবং বিক্রি করি। তাদের (ভারতের) ২০০ শতাংশ শুল্ক আছে। এবং তারপরও আমরা তাদের নির্বাচনে সাহায্য করার জন্য তাদের প্রচুর অর্থ দিচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, আমেরিকান অনুদান প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এর আগে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামও উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেই বক্তব্যে তিনি বলেন, “ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ২ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে যাচ্ছে! কিন্তু কেন আমরা এই অর্থ ভারতকে দেবো? আমাদেরও তো ভোটের হার বৃদ্ধি করা দরকার।”
এছাড়া ভারতকে বেআইনি ভাবে অনুদান দেওয়ার অভিযোগ করে এর আগে বাইডেন প্রশাসনেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। ইলন মাস্কের পাশে দাঁড়িয়ে পূর্বসূরি সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে নিশানা করে তিনি বলেছিলেন, “আমার মনে হয়, (ভারতে এই অনুদান পাঠানোর মাধ্যমে) কাউকে জেতানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা বিষয়টি ভারত সরকারকে জানিয়েছি।”
শুধু তা-ই নয়, এই অনুদানকে “ঘুষের প্রকল্প” বলেও উল্লেখ করেছেন মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। এই ধরনের ব্যবস্থাকে বেআইনি বলে মনে করা হয়।