আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কেরালা রাজ্যের তিরুবনন্তপুরমে ছয়জনকে একের পর এক করে হত্যার পর থানায় গিয়ে রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন ২৩ বছর বয়সী এক যুবক। সোমবার তিরুবনন্তপুরমের থানায় তার এমন স্বীকারোক্তির সময় রীতিমতো বিস্মিত হয়ে যায় পুলিশ। এই ঘটনায় ওই যুবককে আটক করা হয়েছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফফান নামের ওই যুবক থানায় আত্মসমপর্ণ করে পুলিশকে জানান, তিনি ছয়জনকে হত্যা করেছেন। তাদের মধ্যে তার মা, নানী, প্রেমিকা এবং ১৩ বছর বয়সী ভাইও রয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ছয়জনের ওপর নির্মমভাবে আক্রমণ চালিয়েছিলেন আফফান। তবে তার ক্যানসার আক্রান্ত মা বেঁচে গেছেন। বর্তমানে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার জন্য ভেনজারামুদুতে তিনটি বাড়িতে গিয়েছিলেন আফফান। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর পুলিশের কাছে একেক বার একেক রকম বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
তিরুবনন্তপুরম পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আফফান বলেছেন তার বাবা দুবাইয়ের একটি দোকানের মালিক। তিনি ৭৫ লাখ রুপি ঋণ নিয়েছিলেন এবং এ কারণে তিনি আর্থিক সমস্যায়ও ছিলেন। কেউ তাকে সাহায্য করতে রাজি হয়নি। কিন্তু তার বান্ধবী কীভাবে এই ঘটনায় হত্যার শিকার হলো, তা পরিষ্কার নয়।
পুলিশ বলেছে, প্রথমে তার মা ও প্রেমিকার ওপর হামলা চালান আফফান। প্রেমিকা সেই সময় তার বাড়িতেই ছিলেন। ধারাল বস্তু নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেন। এরপর তার ১৩ বছর বয়সী ভাইকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন। প্রতিবেশীরা বলেছেন, ২৩ বছর বয়সী এই যুবক নম্র এবং ভদ্র স্বভাবের ছিলেন। বিশেষ করে নিজের ১৩ বছর বয়সী ভাইকে হত্যার ঘটনায় প্রতিবেশীরা হতবাক বলে জানিয়েছেন।
আফফানের বাড়ির কাছে একটি চায়ের দোকান চালান একজন নারী। তিনি বলেছেন, আফফান তার ভাইকে ভালোবাসতেন। আমি বিশ্বাস করতে পারি না আফফান এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তার সম্পর্কে বলার মতো খারাপ কিছুই নেই। গতকাল বিকেলেও তার (অভিযুক্ত) ছোট ভাইকে দেখেছি। পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত এই বিষয়ে আমরা জানতাম না।
মা, প্রেমিকা এবং ছোট ভাইয়ের ওপর হামলার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে মামার বাড়িতে যান আফফান। সেখানে গিয়ে তার মামা ও মামীর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পরে তাদেরকেও হত্যা করেন। সেখান থেকে তার নানীর বাড়িতে গিয়ে তাকেও হত্যা করেন। এভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ভেনজারামুদু থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন ওই যুবক। সূত্র: এনডিটিভি।