এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : চীনের অন্যতম বৃহৎ রেস্টুরেন্ট চেইন হাইডিলাও হাজারো গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এক গ্রাহকের হটপটে মূত্র মেশানোর ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর এ ঘোষণা এলো।
গত মাসে ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সাংহাইয়ের হাইডিলাও রেস্তোরাঁর একটি শাখায় এক যুবক টেবিলের ওপর দাঁড়িয়ে ফুটন্ত ঝোলের মধ্যে প্রস্রাব করছেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
ব্যবহারকারীরা চীনের অন্যতম জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট চেইনে এমন খাদ্য নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করেন। পরে হাইডিলাও গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দুঃখ প্রকাশ করে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
রেস্তোরাঁটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২৪ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে সাংহাইয়ের বান্দ এলাকায় একটি ব্যক্তিগত কক্ষে খাবার খাওয়ার পর দুই ব্যক্তি একটি হটপটে মূত্রত্যাগ করেন। আমাদের ব্যবস্থাপনায় এমন ধরনের ঘটনার জন্য কোনো প্রস্তুতি ছিল না।
তাই কর্মীরা ঘটনাস্থলে কোনো অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করতে পারেননি এবং ডাইনিং পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
রেস্তোরাঁটি আরো জানায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত তাদের চার হাজার ১০০-এর বেশি অর্ডার নেওয়া হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে রেস্তোরাঁয় খাওয়া বা খাবার অর্ডার করা গ্রাহকদের পূর্ণ অর্থ ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি তার ১০ গুণ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে।
এদিকে সাংহাই পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোর—টাং ও উকে ‘প্রশাসনিক আটক’ করা হয়েছে।
চীনে বেশির ভাগ অপরাধের জন্য ফৌজদারি দায়ভার নেওয়ার বয়সসীমা ১৬ বছর হলেও হত্যার মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে তা ১২ বছর পর্যন্ত হতে পারে।
ফ্রেশ মাংসের টুকরা, সুস্বাদু ঝোল ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের জন্য চীনে ব্যাপক জনপ্রিয় হাইডিলাও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ব্রিটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাখা খুলেছে। তবে তাদের দুঃখ প্রকাশের বার্তা চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েইবোতে ভালোভাবে গ্রহণ করা হয়নি। ব্যবহারকারীরা অভিযোগ করেছেন, প্রতিষ্ঠানটি ভুল স্বীকার করতে কয়েক সপ্তাহ দেরি করেছে। একজন মন্তব্য করেন, ‘এটা (দুঃখ প্রকাশ) আগে কোথায় ছিল? শুরুতেই বললেই কি ভালো হতো না?’
অনেকে রেস্তোরাঁর আগের এক বিবৃতির সমালোচনা করেন, যেখানে তারা ‘বিদ্বেষমূলক তথ্য ছড়ানোর’ জন্য কিছু ব্যক্তিকে দায়ী করেছিল, যা অবশ্য পরে মুছে ফেলা হয়।
চীনে একসময় খাদ্য নিরাপত্তাসংক্রান্ত কেলেঙ্কারির ঘটনা সাধারণ ছিল। ২০০৮ সালে দূষিত গুঁড়া দুধের কারণে কয়েক লাখ শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়। তার পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও খাবারের মান সংক্রান্ত অনিয়ম এখনো দেখা যায়। এ সপ্তাহেই ব্রেইজড চিকেনের একটি বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট চেইন দুঃখ প্রকাশ করেছে, যখন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাদের কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজিতে নোংরা উপকরণ ব্যবহার ও বাসি খাবার পুনর্ব্যবহারের মতো অনিয়ম উন্মোচন করে। সূত্র : এএফপি