আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করা দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম। ২০২৪ সালে দেশটিতে প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটন বাজারে ভিয়েতনামের এমন আধিপত্য দীর্ঘদিনের, যেটিকে আরও এগিয়ে নিতে চাইছে দেশটির সরকার। আর সে কারণে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা করছে তারা।
দেশটির ট্যুরিজম অ্যাডভাইজরি বোর্ড ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদি গোল্ডেন ভিসা চালুর প্রস্তাব পেশ করেছে প্রধানমন্ত্রী ফাম মিনহ চিনের কাছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ভ্যান হোয়া।
ভিসা-নীতিতে সংস্কারের আহ্বান
সম্প্রতি এক সরকারি বৈঠকে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিনহ চিন পর্যটন খাতের উন্নয়নে ভিসা-নীতি সহজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। গত বছর ৯০ দিনের ই-ভিসা চালু এবং ভিসামুক্ত দেশের তালিকা বাড়ানোর পর এবার দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেশটির পর্যটন খাতে নতুন গতি আনবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। দেশটির ট্যুরিজম অ্যাডভাইজরি বোর্ডের প্রস্তাব অনুযায়ী, বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ বছর মেয়াদি গোল্ডেন ভিসা, পাঁচ বছর পর স্থায়ী বসবাসের সুযোগসহ ট্যালেন্ট ভিসা চালুর কথাও বলা হয়েছে। হো চি মিন সিটি, হ্যানয়, ডা নাং ও ফু কুওকের মতো প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এই প্রকল্প প্রাথমিকভাবে শুরু হতে পারে।
উদ্দেশ্য, ২ কোটি ৩০ লাখ বিদেশি পর্যটক
২০২৬ সালের মার্চে লং থান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু তার আগেই ভিয়েতনামের লক্ষ্য, ২ কোটি ৩০ লাখ বিদেশি পর্যটক। আর সব পরিকল্পনা ঠিক থাকলে আগামী বছর মালয়েশিয়াকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান দখল করবে দেশটি।
১ থেকে ৫ বছরের ভিসা
১০ বছরের গোল্ডেন ভিসার পরিকল্পনা করা হলেও আগে থেকে বিনিয়োগের মাধ্যমে এক থেকে পাঁচ বছরের ভিসা দিয়ে আসছে ভিয়েতনাম। মোট চারটি ক্যাটাগরিতে এই ভিসা দেওয়া হয়। প্রথমত, পাঁচ বছরের ডিটি-১ ভিসা। এই ভিসার জন্য বিনিয়োগ করতে হবে প্রায় ৩৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার বেশি। প্রায় ২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে পাওয়া যাবে পাঁচ বছরের জন্য ডিটি-২ ভিসা। তিন বছর মেয়াদে পাওয়া যাবে ডিটি-৩ ভিসা। এ জন্য বিনিয়োগের পরিমাণ দেড় থেকে ২৩ কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া দেড় কোটি টাকার কম বিনিয়োগ করে পাওয়া যাবে এক বছরের ডিটি-৪ ভিসা।
পর্যটন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি ভিসা আর বিনিয়োগকারীদের জন্য স্থায়ী বসবাসের সুযোগ ভিয়েতনামকে আঞ্চলিক বিনিয়োগ এবং পর্যটনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন, সেবার মান বাড়ানো এবং পরিবেশ সংরক্ষণের দিকেও সমান নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা। সূত্র: ইকোনমিকস টাইমস