আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় এ পর্যন্ত ২৬ জন নিহত হয়েছেন বলে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ইতোমধ্যেই সামনে আসতে শুরু করেছে নির্মম হামলার ভয়াবহতা। তেমনি এক নারীর ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে ফেরার গল্প সিনেমাকেও হার মানাবে। খবর হিন্দুস্থান টাইমস
‘মোদিকে বার্তা পাঠাতেভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, ওই নারী জানিয়েছে সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে হত্যা করেছে। কীভাবে তার স্বামীকে হত্যা করেছে এবং কেমন আচরণ করেছে হামলাকারীরা তেমনটি জানাচ্ছিলেন বেঁচে ফেরা পল্লবী নামের ওই নারী।
নির্মম হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, তার স্বামীকে তার সামনেই গুলি করে হত্যা করলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই হত্যাকাণ্ডের বার্তা পাঠাতে বলে তাকে জীবিত রেখেছিল সন্ত্রাসীরা।
হামলার কথা স্মরণ করে পল্লবী বলেন, ‘আমাদের ওপর তিন থেকে চারজন আক্রমণ করেছিল। আমি তাদের বলেছিলাম, আপনারা ইতিমধ্যে আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছেন। আমাকেও মেরে ফেলেন। তাদের একজন বলল, আমি তোমাকে মারব না। যাও মোদিকে গিয়ে বলো।’
মহিলার স্বামী মঞ্জুনাথ রাও (৪৭) কর্ণাটকের শিবমোগার বাসিন্দা ছিলেন। ওই ব্যক্তি তার স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে কাশ্মীর গিয়েছিলেন ছুটি কাটাতে। পরে সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে পল্লবী বলেন, ‘আমি, আমার স্বামী এবং আমাদের ছেলে কাশ্মীরে গিয়েছিলাম। আমরা পাহালগামে ছিলাম। আমার মনে হয় এটা প্রায় দেড়টার দিকে ঘটেছিল। আমার চোখের সামনে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এটা এখনও একটি খারাপ স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।’
হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্সে লিখেছেন, ‘আমি জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমি প্রার্থনা করি যে আহতরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক। ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’
‘এই জঘন্য কাজের পিছনে যারা আছে তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে, তাদের রেহাই দেওয়া হবে না। তাদের অশুভ এজেন্ডা কখনই সফল হবে না। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংকল্প অটুট এবং এটি আরও শক্তিশালী হবে’, যোগ করেন মোদী।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসারনে পর্যটকদের ওপর হামলা করে বন্দুকধারীরা। এতে অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন বিদেশি। একজন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আরেকজন নেপালের নাগরিক।
এই হামলার পর নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার সকালেই দিল্লিতে ফিরেছেন। হামলার পর কাশ্মীরের শ্রীনগরে গেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।