মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:১৫:০৯

দুই দিন না যেতেই নেপালে নতুন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি!

দুই দিন না যেতেই নেপালে নতুন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে দেশটির একদল তরুণ। গত রোববার রাতে রাজধানী কাঠমান্ডুর বালুওয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ ও স্লোগান দেয় জেন-জি আন্দোলনের অন্যতম নেপথ্য নায়ক সুদান গুরুংয়ের নেতৃত্বাধীন একটি দল। 

তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ দিচ্ছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির পদত্যাগও দাবি করেছেন তারা। গতকাল নেপালি সংবাদমাধ্যম সেতুপতির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভে গুরুং ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা যদি আবার রাস্তায় নামি, কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। যেখান থেকে বসিয়েছি, সেখান থেকেই তুলে ফেলব।’ তিনি আরও অভিযোগ তোলেন, ‘অ্যাডভোকেট ওমপ্রকাশ আর্যল... ভেতর থেকেই নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানাচ্ছেন!’ বিক্ষোভে গুরুং গত সপ্তাহের বিক্ষোভে হতাহতদের স্বজনদেরও সঙ্গে এনেছিলেন।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রী কার্কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আইনজীবী আর্যল আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবেন। এর আগে তিনি রমেশ্বর খনালকে অর্থমন্ত্রী ও কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি মন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেন। সুপ্রিম কোর্টে লোকমান সিং কার্কিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান করার বিরুদ্ধে রিট করে আলোচনায় আসেন আর্যল। তিনি নানা জনস্বার্থ মামলায় লড়াই করেছেন এবং কাঠমান্ডু মেট্রোপলিটন সিটির আইন উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন। অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্কির নিয়োগের সময় প্রেসিডেন্ট পাউদেলের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন তিনি। এমনকি কার্কির শপথ অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়া খনাল সাবেক অর্থসচিব। তিনি সম্প্রতি উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক সংস্কার সুপারিশ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে কেপি শর্মা অলির সরকারকে ৪৪৭ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দেন। ওই প্রতিবেদনে অর্থনীতির দুর্বল দিকগুলো, সেসব সমস্যার কারণ, তাৎক্ষণিক করণীয় ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া ঘিসিং ছিলেন নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার দক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে নেপালে লোডশেডিং বন্ধ হয়। এ জন্য তিনি সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তবে কয়েক মাস আগে কেপি শর্মা অলি সরকার তাকে সরিয়ে দিয়ে হিতেন্দ্র দেব শাক্যকে বসায়। গতকাল এই তিনজন বিভিন্ন মন্ত্রণায়ের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী কার্কি প্রথমে তিনজনের সঙ্গেই ফোনে কথা বলেন। পরে তাদের দপ্তরে ডেকে এনে আলোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন। এর আগে সুশীলা কার্কি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সবিতা ভান্ডারিকে অ্যাটর্নি জেনারেল করেন।

গত রোববার সকাল থেকেই কার্কি মন্ত্রিসভা গঠনে আলোচনা শুরু করেন। মন্ত্রিসভায় সর্বোচ্চ ১১ জন সদস্য থাকতে পারবেন, প্রধানমন্ত্রীসহ। অর্থাৎ যেসব মন্ত্রী নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের অতিরিক্ত দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে। পরে অবশ্য সুশীলা কার্কির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার আকার ১৫ সদস্যের বেশি হবে না।

অল জেন-জি আন্দোলনের চাপের মুখে পদত্যাগ করার পর গত শুক্রবার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হন সুশীলা কার্কি। তিনি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি। সে সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কারণে তিনি দেশটিতে ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রধানমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার পরই সংসদ ভেঙে দেওয়া হয় এবং আগামী ৫ মার্চ নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে