রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১১:৩১:০৯

বিদেশি কর্মী নিয়োগে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যে সুখবর ভিসা নিয়ে

বিদেশি কর্মী নিয়োগে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যে সুখবর ভিসা নিয়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষ বিদেশি কর্মী নিয়োগে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির এ সিদ্ধান্তে বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিবাসীরা। তবে এ থেকে স্বস্তির খবর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কাদের জন্য বাড়তি ভিসা ফি কার্যকর হবে তা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসার জন্য নতুন করে এক লাখ ডলার আবেদন ফি রোববার থেকে কার্যকর হচ্ছে। এই ফি আবেদনকারীকে একবারই পরিশোধ করতে হবে, এটি বাৎসরিক ফি নয়।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট শনিবার এক্সে এক পোস্টে বলেন, এটি একটি এককালীন ফি, কেবল নতুন আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য। যারা এরই মধ্যে বৈধ এইচ-১বি ভিসা পেয়েছেন এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আছেন, তাদের এই ফি দিতে হবে না।

এর আগে শুক্রবার কমার্স সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছিলেন, এই ফি বাৎসরিক হতে পারে, তবে তখনো বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলেন।

লেভিট বলেন, বর্তমান ভিসাধারীরা আগের মতোই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে পারবেন। এই নতুন ফি শুধু ভবিষ্যতের নতুন এইচ-১বি লটারির আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, পুনঃনবায়ন বা বর্তমান ভিসা হোল্ডারদের ক্ষেত্রে নয়।

হোয়াইট হাউস জানায়, এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় শ্রমিকদের জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করা, যাদের ‘নিম্ন বেতনে বিদেশি শ্রমিক দিয়ে প্রতিস্থাপন’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে।

তবে ‘জাতীয় স্বার্থ’-এর কথা বিবেচনায় রেখে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এই ফি মওকুফের সুযোগ রাখা হয়েছে।

ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ন্যাসকম বলেছে, এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় আইটি কোম্পানিগুলোর বিশ্বব্যাপী কার্যক্রমে বড় ধাক্কা দিতে পারে। কারণ এই কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক দক্ষ কর্মী প্রেরণ করে।

হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ সালে যেখানে ৩২ শতাংশ আইটি কর্মী এইচ-১বি ভিসায় ছিলেন, বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে ৬৫ শতাংশের বেশি হয়েছে।

আলজাজিরা জানিয়েছে, এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানিগুলো বিদেশি দক্ষ পেশাজীবীদের, বিশেষ করে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, সফটওয়্যার প্রোগ্রামারদের কাজের জন্য তিন বছরের জন্য ভিসা দিয়ে আনে, যা ছয় বছর পর্যন্ত বাড়ানো যায়। ২০২৪ সালে এইচ-১বি ভিসা পাওয়াদের মধ্যে ভারতীয়রাই ছিল সর্বাধিক। দেশটির নাগরিকরা মোট আবেদনকারীর ৭১ শতাংশ ছিলেন।

এদিকে শুক্রবার বাড়তি ফি ঘোষণার সময় ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। তিনি বলেন, এইচ-১বি ভিসার জন্য বছরে এক লাখ ডলার দিতে হবে এবং সব বড় কোম্পানি এতে রাজি আছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। যদি তুমি কাউকে প্রশিক্ষণ দিতে যাও, তাহলে আমাদের দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি স্নাতক হওয়া একজনকে প্রশিক্ষণ দেবে। আমেরিকানদের প্রশিক্ষণ দাও। আমাদের চাকরি কেড়ে নেওয়ার জন্য লোক আনা বন্ধ করো।

বাড়তি ফি আরোপের পক্ষে ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, কর্মসূচিটির অপব্যবহার রোধ করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ না করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

এই ভিসার জন্য বিভিন্ন প্রশাসনিক ফি বাবদ মোট ১ হাজার ৫০০ ডলার খরচ করতে হতো। ২০০৪ সাল থেকে এইচ-১বি ভিসা ক্যাটাগরিতে প্রতি বছর কেবল ৮৫ হাজার জনকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে