আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে যাত্রা শুরু করে তার রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান ‘উইং অব জায়ন’।
যাত্রাপথে কেবল গ্রিস ও ইতালির আকাশসীমা ব্যবহার করেছে নেতানিয়াহুর বিমান। ইউরোপের বাকি দেশগুলোর আকাশসীমা এড়িয়ে শত শত কিলোমিটার বেশি ঘুরে গন্তব্যে যাচ্ছেন বিমানটি।
ফ্লাইট ট্র্যাকারের তথ্যানুযায়ী, পরিবর্তিত এই রুটের কারণে নেতানিয়াহুর যাত্রাপথ অন্তত ৬০০ কিলোমিটার (৩৭২ মাইল) বেড়ে যায়।
ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ জানায়, এভাবে উড়াল দেওয়ার পেছনে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার আশঙ্কা কাজ করেছে। গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করা হলেও ইসরায়েল তা অস্বীকার করছে।
ইউরোপের বহু দেশ, যারা আইসিসি’র সদস্যভুক্ত, জানিয়েছে—আইসিসির নির্দেশনা অনুযায়ী নেতানিয়াহু তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য থাকবে তারা। এই প্রেক্ষাপটেই নেতানিয়াহুর বিমানটি স্পেনসহ একাধিক দেশের আকাশসীমা এড়িয়ে যায়।
ফ্রান্সে প্রবেশের জন্য ইসরায়েল আগে থেকেই অনুমতি চেয়েছিল এবং ফরাসি কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের মতে, অনুমতি দেওয়াও হয়। তবে বাস্তবে বিমানটি ফরাসি আকাশসীমা ব্যবহার করেনি। ফরাসি কর্মকর্তা বলেন, “ওরা অন্য রুট বেছে নিয়েছে, তবে এর কারণ আমাদের জানা নেই।”
এই সফরে সাংবাদিকদের না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা গত সপ্তাহেই জানিয়েছিল ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সরকারি ব্যাখ্যা ছিল নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ। তবে আই২৪ নিউজ দাবি করেছে, দীর্ঘ রুটের কারণে বেশি জ্বালানি প্রয়োজন হবে বলে বিমানে যাত্রীসংখ্যা কম রাখার কৌশল হিসেবে সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
ফেব্রুয়ারিতেও যুক্তরাষ্ট্র সফরে নেতানিয়াহুর ফ্লাইটকে বর্ধিত পথ বেছে নিতে হয়েছিল। এছাড়া চলতি বছরের মে মাসে তিনি আজারবাইজান সফর বাতিল করেন, কারণ তাতে তুরস্কের আকাশসীমা ব্যবহার করতে হতো। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান, যিনি ইসরায়েলের কড়া সমালোচক এবং হামাসের প্রশংসাকারী, তিনি উইং অব জায়ন–কে তুর্কি আকাশ ব্যবহার করতে দেননি।
মাত্র দুই মাস আগেও জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফরে নেতানিয়াহুর বিমান সরাসরি রুট ব্যবহার করতে পেরেছিল। তবে পরিস্থিতি পাল্টেছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই ফ্রান্সসহ ১০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে অনেকটা চাপ অনুভব করতে পারেন নেতানিয়াহু। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল