আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। এতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ১০০ ডলার ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে দাম বেড়ে সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে রুপাও।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১৩ অক্টোবর) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৯ দশমিক ৫৫ ডলারে, যা সেশনের শুরুতে পৌঁছেছিল রেকর্ড ৪ হাজার ১০৩ দশমিক ৫৮ ডলারে।
একই সময়ে ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য মার্কিন স্বর্ণের ফিউচার ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১২০ দশমিক ১০ ডলারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন মার্কিন-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ছে। এতে স্বর্ণের বাজারে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে।
ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ফেডের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা এবং বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বর্ণ কেনার জোরালো প্রবণতার কারণে চলতি বছর স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫৬ শতাংশ। গত সপ্তাহেই প্রথমবারের মতো ৪,০০০ ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে এই ধাতুটি।
সিপিএম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা অংশীদার জেফ্রি ক্রিশ্চিয়ান বলেন, 'যখন বিনিয়োগকারীরা বিশ্বের অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন, তখনই স্বর্ণ ও রুপার দাম বাড়তে থাকে।'
ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার (১০ অক্টোবর) চীনের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্য উত্তেজনা শুরু করেছেন। এর ফলে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে থাকা অস্থির যুদ্ধবিরতির সমাপ্তি ঘটেছে।
এদিকে, ব্যবসায়ীরা এখন ধরে নিচ্ছেন যে, অক্টোবরে ফেডারেল রিজার্ভ ২৫ বেসিস পয়েন্ট এবং ডিসেম্বরে আরও এক দফা সুদের হার কমাবে। স্বর্ণ, যেটি একটি অ-ফলনশীল সম্পদ, সাধারণত কম সুদের হারের সময়ে লাভজনক হয়ে ওঠে।
ব্যাংক অব আমেরিকা ও সোসিয়েতে জেনারেলের বিশ্লেষকরা আশা করছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে স্বর্ণের দাম পৌঁছাতে পারে ৫,০০০ ডলারে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডও আগামী বছরের জন্য তাদের গড় পূর্বাভাস বাড়িয়ে ৪,৪৮৮ ডলার করেছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের পণ্য গবেষণা বিভাগের গ্লোবাল প্রধান সুকি কুপার বলেন, 'আমাদের মতে, এই উত্থান যুক্তিসঙ্গত; তবে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল বৃদ্ধির জন্য স্বল্পমেয়াদে কিছুটা সংশোধন ভালো হবে।'
স্পট রুপার দামও বেড়ে ৩.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৫১.৯৫ ডলারে, যা সেশনের শুরুতে রেকর্ড ৫২.০৭ ডলার ছুঁয়েছিল। স্বর্ণের মতোই রুপার বাজারেও চাহিদা ও বিনিয়োগ প্রবণতা বাড়ছে।
অন্যদিকে, প্ল্যাটিনামের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৬৬০.৫৭ ডলারে এবং প্যালাডিয়ামের দাম বেড়ে হয়েছে ১,৪৮২ ডলার প্রতি আউন্স।