বুধবার, ১৬ মার্চ, ২০১৬, ০৮:৩৪:০৯

‌‘পুলিশের কি মেরুদণ্ড আছে’?

‌‘পুলিশের কি মেরুদণ্ড আছে’?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কান্দি অপহরণ মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের পরে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসেও পুলিশ প্রশাসনের মেরুদণ্ড আছে কি নেই, সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর।

একইসঙ্গে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানান, এরপরও রিপোর্টে গাফিলতির প্রমাণ মিললে তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

কান্দি পৌরসভার নির্দল কাউন্সিলর দেবজ্যোতি রায়ের অপহরণের ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে মোট দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। একদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করেছেন দেবজ্যোতির স্ত্রী সান্ত্বনা।

অন্যদিকে আস্থা ভোটকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করেছে কংগ্রেস। প্রথমটি বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে বিচারাধীন। দ্বিতীয়টির শুনানি চলছে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অপহৃতের স্ত্রীয়ের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত মন্তব্য করেছিলেন, ‘মেরুদণ্ডহীন হওয়ায় প্রশাসন বারবার চাপের মুখে ভেঙে পড়ছে।’ এদিন সেই সুরেই ‘ক্ষুব্ধ’ বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘পুলিশের যে মেরুদণ্ড রয়েছে তদন্তে অন্তত তার প্রমাণ দেওয়া উচিত! আজীবন তদন্ত চলতে পারে না।’

বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেছিলেন, ‘প্রশাসন যে মেরুদণ্ডহীন একাধিক ঘটনায় তা লক্ষ্য করছি। আইজি, ডিজি’দের কোনও নির্দেশ দেওয়া হলে তারা নির্দেশিকা জারি করেই ক্ষান্ত থাকছেন। নির্দেশিকা কার্যকর করা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয় না। অপহরণের মতো সামান্য ঘটনা প্রশাসনের দুরবস্থাকে তুলে ধরছে। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক!’

আর এদিন মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়ে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘শেষবারের মতো সুযোগ দিচ্ছি। তদন্ত হয়েছে তার প্রমাণ দিতে না পারলে এবার তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত যেদিন ওই মন্তব্য করেছিলেন তার পরদিনই দেবজ্যোতি সত্যিই অপহৃত হয়েছিলেন কি না, তা জানতে চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়।

গত ৯ মার্চ পুলিশ সুপার ওই রিপোর্ট জমা করেন। তখনই আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের তদন্ত। সংশ্লিষ্ট বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণে জানান, ঘটনার পর্যায়ক্রম চাওয়া হয়নি। দেবজ্যোতিকে আদৌ অপহরণ করা হয়েছিল কি না, তা নির্দিষ্ট করে জানতে চেয়েছিল আদালত। কিন্তু রিপোর্টে তার কোনও উল্লেখ নেই। এরপর নতুন করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি।

এদিন সেই রিপোর্ট পেশ করা হলেও, ভৎসনা এড়াতে পারেননি মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার। বিচারপতি বলেন, ‘কী তদন্ত হয়েছে রিপোর্টে তারই কোনও উল্লেখ নেই। যা জানতে চেয়েছি তার উত্তর নেই। এ ধরনের রিপোর্ট গ্রহণ করার প্রশ্নই ওঠে না।’
১৬ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে