আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভয়ঙ্কর মৃত্যুর সময়েও হাতে হাত ধরে বসেছিল নবদম্পতি। কেন বসেছিল তার রহস্য জানতে চাইলে আপনাকে পড়তে হবে।
মাত্র দেড় মাস হলো বিয়ে হয়েছিল তাদের।
কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস সেই সুখ কপালে সইল না। নিজের বাড়িতেই ভয়ঙ্কর আগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হলো নব-দম্পতির। ৩০ বছরের শঙ্কর দাশ ও ২৬ বছরের অর্পিতা দাশ।
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এমন খবর জানা গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের হাওড়ার শালকিয়া অঞ্চলের ১২ নং ওয়ার্ডে। এ ওয়ার্ডের ৪৪ নং ত্রিপুরা রায় লেনের তিন তলা বাড়িটির পরিবেশ সকাল থেকেই থমথমে। গতকালও যে বাড়ি স্বাভাবিক নিয়মেই হেসে-খেলে চলছিল আজ সেই বাড়ির সবাই শোকে পাথর। গোটা পাড়াই যেন থমথম করছে।
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৫টার দিকে হঠাৎই বিকট বিস্ফোরণের শব্দে জেগে যায় গোটা পাড়া। পাশের বাড়িতে থাকেন রমেশ সাতঁরা নামের এক ভদ্রলোক। শব্দ পেয়েই ছুটে আসেন তিনি।
ছুটে আসেন পাড়ার সবাই। তিন তলা বাড়িটির একেবারে ওপরের তলায় থাকতেন ওই দম্পতি। আর নিচের তলায় থাকেন শঙ্করের বাবা-মা। মাণিক দাশ ও জবা দাশ। বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে পাড়ার সবাই এসে দেখেন তিনতলায় শঙ্কর ও অর্পিতার বেডরুম এবং বেডরুম লাগোয়া ড্রয়িংরুম থেকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে।
প্রচণ্ড ধোঁয়াও বের হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা করেও প্রচণ্ড আগুনের হলকার সামনে ব্যার্থ হয়। এরপরই খবর দেয়া হয় দমকলে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দুটি দমকল।
কিন্তু বাড়িটির সামনের গলি সরু থাকায় বাড়ির সামনে আসতে পারে না দমকলের ইঞ্জিন। রাস্তার কল থেকে রিলে করে পানি এনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিন তলার দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে দমকল বাহিনীর সদস্যরা। এরই মধ্যে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, ড্রয়িংরুমের সমস্ত আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বেডরুমের অবস্থাও তথৈবচ। বেডরুমের মেঝেতে সম্পূর্ণ দগ্ধ অবস্থায় হাত ধরাধরি করে বসে আছেন মৃত এই দম্পতি।
এরপরই প্রশ্ন ওঠে, কীভাবে এমন ভয়ঙ্কর আগুন লাগলো? কিসের থেকেই বা এমন বিকট বিস্ফোরণ হলো? পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্ভবত এসি থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে। এই পরিবারের প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে।
তিনতলার ড্রয়িংরুমে প্রচুর দাহ্য পদার্থ রয়েছে। রয়েছে নানান ধরনের রাসায়নিকও। সেই কারণেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। ওই দম্পতির মৃতদেহ হাওড়া পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার জেরে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছিলেন এলাকার কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠক এবং তৃণমূল প্রার্থী লক্ষ্মীরতন শুক্না।
৩১ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম