বৃহস্পতিবার, ০৭ এপ্রিল, ২০১৬, ০৪:৫৬:৪৭

মমতাকে নরেন্দ্র মোদির কড়া আক্রমণ

মমতাকে নরেন্দ্র মোদির কড়া আক্রমণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য বের ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পরিববর্তন, পরিবর্তন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। জনতা হিসেব চাইছে। মা-মাটি-মানুষ নয়, গত পাঁচ বছরে শুধু শুনেছি মৃত্যু, মৃত্যু আর মৃত্যু। পশ্চিমবঙ্গে মা-মাটি-মানুষের জায়গা নিয়েছে মৃত্যু।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে নির্বাচনের প্রথম প্রচারে এসে এক সভায় মমতা এবং শাসক দলকে কড়া আক্রমণ করে ওসব কথা বলেন নরেন্দ্র মোদী। সভাটি বীরপাড়ার অনুষ্ঠিত হয়।

সভা মোদি আরও বলেন, এখানে নির্বাচনের সময়ে একটা ব্রিজ ভেঙে পড়ল। দুর্নীতির ভয়ঙ্কর পরিণতি বোধহয় এটাই। কেউ মরলে কোনও মুখিয়া গিয়ে আগে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। আর দিদি ওখানে গিয়ে প্রথমেই বামেদের ঘাড়ে দোষ চাপালেন। আরে দিদি, মৃত্যুকে তো সম্মান করুন।

তিনি আরও বলেন, দিদি আমাকে বলুন, যেদিন এই ব্রিজের কাজ শেষ হওয়ার পরে আপনি উদ্বোধন করতে যেতেন, সেদিন কি আপনি ব্রিজের কাজ শুরু করার জন্য বামেদের ধন্যবাদ জানাতেন? তখন তো নিজে ব্রিজ তৈরির কৃতিত্ব নিতেন।

মোদির অভিযোগ, ব্রিজ ভাঙলে এরা বলেন ‘অ্যাক্ট অফ গড’। দিদি, ‘এটা অ্যাক্ট অফ ফ্রড:। আসলে এটা ভগবানের বার্তা, আজকে ব্রিজ ভেঙেছে। কাল বাংলা ধ্বংস হবে। ভগবান বাংলাকে বাঁচানোর জন্য বার্তা দিচ্ছেন।

মোদি আরও বলেন, আপনারা তো নারদ দেখেছেন। নারদ জানেন তো? টিভিতে দেখেছেন তো? মা-মাটি-মানুষওয়ালারা টাকা নিচ্ছে। ক্যামেরার সামনে, বলছে কাজ করে দেবে। বলছে বড় কাজ, আরও বেশি লাগবে। টাকা দিন কাজ হয়ে যাবে। কেউ বলছেন পরের বার কত দেবেন? মা-মাটি-মানুষের বদলে কখনও মৃত্যু, কখনও টাকার কথা সামনে আসছে। মৃত্যু আর টাকার জন্যই কি পরিবর্তন এনেছিলেন?

ওই সভায় মোদি আরও বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে কি মৃত্যু আর টাকা খাওয়ার জন্য পরিবর্তন আনা হয়েছিল। পাঁচ বছর আগে দিদি এখানে যখন নির্বাচন লড়েছিলেন মনে হয়েছিল বাম আমলের অপশাসনের পরে বাংলায় বদল আনবেন। কিন্তু দিদি বাংলার আরও বদনাম বাড়িয়েছেন, বাংলাকে ধ্বংস করেছেন। বাংলার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

সারদা চিট ফান্ডে কি বড়লোকদের টাকা গিয়েছে না গরিবদের? যারা আপনাদের টাকা লুটেছে, তাদের কি সারাজীবন জেলে কাটানো উচিত না? আর দিদি, সারদা চিটফান্ডে যারা টাকা লুটেছে তাদের বাঁচাচ্ছেন। তাহলে দিদিকেও কি ঘরে পাঠানো উচিত না?

নির্বাচনের সময়ে শাসক দলের দায়িত্ব কতগুলো  স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল তাদের আমলে তৈরি হয়েছে, তার হিসেব দেওয়া। কিন্তু এখানে কটা স্কুল, হাসপাতাল, গরিবদের কটা ঘর, কত কিমি গ্রামীণ রাস্তা হয়েছে তার হিসেব নেই। বামেরা তৃণমূল আমলে কত ধর্ষণ হয়েছে, কটা মৃত্যু হয়েছে আর কত বোমা তৈরি হয়েছে সেই হিসেব দিচ্ছে, আর তৃণমূল বাম আমলের হিসেব দিচ্ছে।

বাংলার মানুষ বাম-তৃণমূল দু’পক্ষকেই দেখে নিয়েছে। দু’পক্ষেরই কাজ করার ধরন বুঝে নিয়েছে। আগে বাংলা যা ভাবত দেশ করত।

স্বাধীনতার পরে কংগ্রেস, বাম এবং এখন দিদি বাংলাকে এত নতুন নতুন উপায়ে বরবাদ করেছে যে এখন এদের হাতে বাংলা নিরাপদ নয়। ভারত সরকার রাজ্যের ভালর জন্য জরুরি বৈঠক ডাকলে মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ডাকলে দিদি যান না। বৈঠকে এসে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে কী ক্ষোভ, অভিযোগ রয়েছে দিদি বলতে পারতেন। কিন্তু না, মোদীর ডাকা মিটিংয়ে যাওয়া যাবে না। তাতে বাংলার সর্বনাশ হয় হোক।

মমতাদিদি মোদীর মিটিংয়ে আসতে রাজি হন না, কিন্তু দিল্লিতে গেলেই সোনিয়াজির সঙ্গে দেখা করেন। হিসেবটা ঠিক বুঝতে পারি না। এখানে কংগ্রেস-বাম জোট হয়েছে। আর দিল্লিতে গেলেই সোনিয়াজির আশীর্বাদ নিয়ে ফটো তোলেন দিদি। তাহলে বুঝতে পারছেন তো, যাঁরা নিজেরাই গোপনে মিলেমিশে রয়েছেন, তাঁরা আপনাদের ভাল করতে পারেন না।

যারা আপনাদের কথা শোনেন না, তাঁদের বাংলার ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিন। চা বাগান শ্রমিকদের মঙ্গল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমায় করতে দেওয়া হয়নি। তবে আমার নিজের ফর্মুলা আছে। শ্রমিকদের উন্নতি করা থেকে আমায় কেউ আটকাতে পারবে না।

সিন্ডিকেটের এমন  চক্র চলছে যে সবকিছু তার নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। এখানে তো চন্দনকাঠেরও সিন্ডিকেট চলে।

মমতাদি নির্বাচন আসবে যাবে। গরিবদের পেট খালি রেখে আপনি বাংলার ভাল করতে পারবেন না। অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠাবই। দেশের যুবকদেরই একমাত্র রোজগারের অধিকার থাকা উচিত।’
৭ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে