বৃহস্পতিবার, ০৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:৩২:০৯

এই অন্ধ ছেলেটিই আজ ৫০ কোটির কোম্পানির সিইও

এই অন্ধ ছেলেটিই আজ ৫০ কোটির কোম্পানির সিইও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জন্ম থেকেই দৃষ্টিশক্তিহীন শ্রীকান্ত ভোল্লা।  কিন্তু শারীরিক অক্ষমতা তার মানসিক জোরকে দমাতে পারেনি।  তাই জন্মান্ধ যে শ্রীকান্তকে একদিন ফিরিয়ে দিয়েছিল IIT, সেই শ্রীকান্তই আজ ৫০ কোটির কোম্পানির সিইও।  

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব উপকূলের এক অখ্যাত গ্রামের শ্রীকান্ত ভোল্লার জীবন শুধুই নয়, বদলে দিয়েছে আরো বহু শারীরিকভাবে অক্ষম মানুষের জীবন।

অন্ধ্রপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্মান্ধ শ্রীকান্তের জন্মের পরই তাকে ত্যাগ করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন পাড়ার লোকজন।  প্রতিবন্ধী ছেলের বোঝা সারাজীবন বয়ে বেড়ানোর যেকোনো মানে হয় না, তাও বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন।

কিন্তু হাজার উপদেশেও মানেননি শ্রীকান্তের বাবা-মা।  মাসে রোজগার মাত্র ১,৬০০ টাকা।  তাও ছেলেকে লেখাপড়া শেখানোয় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন তারা। গ্রামের যে স্কুলে তাকে ভর্তি করা হয়, সেখানে তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন্য নিয়মিত ঠাট্টা-ইয়ার্কির শিকার হতে হয়।   

সেখান থেকে বেরিয়ে শারীরিকভাবে অক্ষম ছেলেমেয়েদের জন্য বিশেষ স্কুলে ভর্তি হন তিনি।  ক্লাস টেনের বোর্ডের পরীক্ষায় ৯০%নম্বর পান শ্রীকান্ত।  চোখে দেখতে না পাওয়ার জন্য তাকে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি করাতে চায়নি কোনো কলেজ কর্তৃপক্ষ।

অনেক লড়াইয়ের পর বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সুযোগ পান শ্রীকান্ত।  কিন্তু সেখানেই শেষ নয়, এবার শুরু হয় ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোনজিতে ভর্তির চেষ্টা।  

কিন্তু শারীরিক অক্ষমতার দোহাই দিয়ে শ্রীকান্তকে সুযোগ দেয় না দেশের কোনো আইআইআইটি।  আইআইটি ফিরিয়ে দিলেও ফেরায় না এমআইটি। প্রথম আন্তর্জাতিক দৃষ্টশক্তিহীন ছাত্র হিসেবে আমেরিকার ম্যাসাটুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোজিতে পড়ার সুযোগ পান শ্রীকান্ত।

সেখানকার পাট চুকিয়ে দেশে ফিরে আসেন শ্রীকান্ত।  তার মতো শারীরিকভাবে অক্ষম ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু করবেন, তা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল তার।  

৩০০০ প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষা ও কারিগরী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেন তিনি।  শিক্ষা তো হলো কিন্তু চাকরি? এরপরই নিজের কোম্পানি খোলেন শ্রীকান্ত।  এখানে শুধুমাত্র শারীরিকভাবে অক্ষম যুবক-যুবতীদেরই নেয়া হয়।

তার কোম্পানি বোলান্ট ইনডাস্ট্রিজে পরিবেশ-বান্ধব প্যাকেজিং ব্যবস্থা উত্‍পাদন হয়।  বর্রমানে ১৫০ জন এখানে কাজ করে।

তার জীবন অনুপ্রেরণা দেয় আরো অসংখ্য মানুষকে, যারা শারীরিক অক্ষমতায় সমাজে পিছিয়ে পড়েছেন।  শিক্ষা দেয় তাদের, যারা কোনো কারণ ছাড়াই অপমান করে, সমাজ-বিচ্ছিন্ন করে রাখে প্রতিবন্ধকতার জন্য অসহায় কিছু মানুষকে।  
৭ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে