রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬, ০২:১৯:২১

৭৭ লাখ টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ক্যামেরন

৭৭ লাখ টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ক্যামেরন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ৭৭ লাখ টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। পানামার ল’ ফার্ম মোসাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া নথিতে প্রয়াত পিতার অফশোর কোম্পানি ছিল বলে জানাজানি হওয়ার পর চাপের মুখে নিজের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করেছেন তিনি। ক্যামেরনের পিতাও এই সুযোগ ব্যবহারকারীদের মধ্যে একজন ছিলেন। এ তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর পিতার সম্পদের সুবিধাভোগী হিসেবে ক্যামেরনের পদত্যাগের দাবি ওঠে।

মোস্যাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া এক কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি বিশ্বব্যাপী ‘পানামা পেপার্স’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের মক্কেলদের অর্থ পাচারে সহযোগিতা করেছে, নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর এবং কর ফাঁকি দেওয়ার পথ দেখিয়েছে। এসব পথের সুযোগ নিয়ে বিশ্বের ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা কোন কৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, কালো টাকা সাদা করেছেন।

পিতার সঙ্গে ক্যামেরনের আর্থিক সম্পর্কের বিস্তারিত প্রকাশ করার দাবি তোলেন পার্লামেন্টের বিরোধীদলীয় সদস্যরা। এসব দাবির মুখে নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়ে রবিবার নিজের আয়কর বিবরণীর বিস্তারিত প্রকাশ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। দেশটির প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র ক্যামেরনই নিজের আয়কর বিবরণী প্রকাশ করলেন।

প্রকাশিত বিবরণীতে দেখা যায়, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ক্যামেরনের দুই লাখ ৩০৭ পাউন্ড আয়ের উপর ৭৫ হাজার ৮৯৮ পাউন্ড কর দিয়েছেন। তার আয়ের মধ্যে আছে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়া বেতনের এক লাখ ৪০ হাজার ৫২২ ডলার, নিজ দল টোরি পার্টি থেকে ভাতা হিসেবে পাওয়া নয় হাজার ৮৩৪ পাউন্ড, লন্ডনের তার পারিবারিক বাড়ির অংশের ভাড়া বাবদ ৪৬ হাজার ৮৯৯ পাউন্ড এবং ব্যাংকে জমানো অর্থের সুদ তিন হাজার ৫২ পাউন্ড।

তবে ক্যামেরনের বাবার মৃত্যুর আগে তিনি তার ছেলের জন্য ৩ লাখ পাউন্ড রেখে যান। এরপর তার মা তাকে আরো ২ লাখ পাউন্ড দেন।

ব্রিটিশ আইন অনুসারে এই ৫ লাখ পাউন্ডের ওপর (প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা) ক্যামেরনের ৭০,০০০ পাউন্ড বা ৭৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা কর দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তা পরিশোধ করেননি। অর্থাৎ এই বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছেন।

এসব বিবরণী প্রকাশ করার আগে ক্যামেরন দাবি করেছিলেন, নিজের আর্থিক বিষয়গুলো নিয়ে ওঠা অভিযোগের জবাব তিনি ভালোভাবেই দিতে পারবেন।

‘পানামা পেপার্স’ কেলেঙ্কারির সঙ্গে বহু রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্বের নাম জড়িয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। মোসাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া নথিগুলোতে অফশোর করস্বর্গগুলোতে আইনি প্রতিষ্ঠানটির দুই লাখেরও বেশি কোম্পানি তৈরির বিস্তারিত তথ্য আছে।

এসব কোম্পানির কয়েকটি মালিক হিসেবে ক্যামেরনের প্রয়াত পিতার নাম প্রকাশ পেলেও ক্যামেরনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ওঠেনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার ক্যামেরন জানান, তার পিতার অফশোর ট্রাস্টে তার কিছু শেয়ার ছিল এবং সেগুলো থেকে তিনি লাভবান হয়েছিলেন।

ওই শেয়ারগুলো কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য নয়, বরং ডলার-নিয়ন্ত্রিত বাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন তারা এবং নিজের বিনিয়োগ থেকে আসা আয়ের উপর প্রযোজ্য সব আয়কর পরিশোধ করেছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে তিনি ওই শেয়ারগুলো বিক্রি করে দেন বলে জানিয়েছেন।
১০ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে