সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ০২:৫১:১২

‘ইনশাল্লাহ’ বলায় বিমান থেকে নামিয়ে দেয়া হলো মাঝপথে

‘ইনশাল্লাহ’ বলায় বিমান থেকে নামিয়ে দেয়া হলো মাঝপথে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আরো একটি নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে যে মুসলিম বিদ্বেষ চরম আকার ধারণ করেছে- তার জ্বলন্ত প্রমাণ বহন করে এই ঘটনা। সেখানে যত সমস্যা মুসলমানদের নিয়ে, অন্য কোন ধর্মাবলম্বীদের কোন সমস্যা হয় না।

সম্প্রতি ‘ইনশাল্লাহ’ উচ্চারণ করায় এক মুসলিম যুবককে মাঝপথে বিমান থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই যুবকের নাম খায়রুলদীন মাখজুমি। ২৬ বছরের ওই যুবক যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী একজন ইরাকি শরণার্থী। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গত ৯ এপ্রিল তিনি অকল্যান্ড যাওয়ার জন্য লস এঞ্জেলস বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সাউথওয়েস্ট এয়ারলইন্সের বিমানে ওঠেছিলেন। পরদিনেই তার জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে ডিনার করার কথা ছিল। এ নিয়ে দারুণ উত্তেজিত ছিলেন খায়রুলদীন।

তিনি বিমানে উঠার পর তার চাচাকে ফোন করেন। ওকল্যান্ডে পৌঁছানোর পর চাচা তাকে ফোন দেয়ার কথা বলেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘ইনশাল্লাহ’। এই আরবি শব্দটির বাংলা হচ্ছে আল্লাহ চাহেতো বা আল্লাহর ইচ্ছায় যা মুসলিমরা প্রায়ই বলে থাকেন।

কিন্তু তার মুখে এ কথা শোনার পর তার পাশে উপবিষ্ট নারী যাত্রীটি দৌড়ে ক্রুদের কাছে ছুটে যান। খায়রুলদীন ভেবেছিলেন উচ্চস্বরে কথা বলার জন্য তিনি আপত্তি জানাতে গেছেন। কিন্তু দু মিনিট পরেই পুলিশ নিয়ে আসেন বিমানের এক কর্মকর্তা।

তাদের সঙ্গে থাকা গোয়েন্দা কুকুর তার ব্যাগ শুঁকতে থাকে। তারা তার মানিব্যাগ কেড়ে নেয় এবং জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানতে চায়।

এরপরই তাকে জোর করে বিমান থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। এ সম্পর্কে খায়রুলদীন বলেন,‘ আমি তখন খুব অপমান বোধ করছিলাম। আতঙ্কিত ছিলাম। আমি তাদের পুরো ঘটনা খুলে বললাম। এমনকি চাচার সঙ্গে আমার ফোনালাপের ভিডিও দেখালাম।’ কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। তাদের একই প্রশ্ন, ‘তুমি আরবীতে কার সঙ্গে কথা বলছিলে?’

বিমান থেকে নামিয়ে তাকে এফবিআই কার্যালয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা তাকে ছেড়ে দেয়। পরে তিনি অন্য বিমানে করে অকল্যান্ডে পৌঁছান। এ সম্পর্কে এক বিবৃতিতে এফবিআই’র লসএঞ্জেলস শাখা জানিয়েছে, তারা অনুরোধে পরে খায়রুলদীনের ওপর তদন্ত চালিয়েছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন  খায়রুলদীন। তারা তার টিকেটের টাকা ফেরত দিলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। -সিএনএন
১৮ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে