আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ‘রোহিঙ্গা’ বলায় সেদেশে মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেছে উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা। বৌদ্ধ বিক্ষুভরাও তাদের সাথে যোগ দেয়।
বৃহস্পতিবারের এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেন, মুসলিমরা রোহিঙ্গা নয়, তারা বাংলাদেশ থেকে আগত বাঙালি। যদিও মুসলিমরা মিয়ানমারে কয়েক শতাব্দী ধরে বাস করে আসছেন। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের দেশটির আদিবাসী বলে স্বীকার করে না এবং তাদের নাগরিকত্ব এবং মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে।
পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে প্রায় ১০ লাখ মুসলিম বাস করেন, যাদের ভূমি এবং সম্পদ দখল করার জন্য বৌদ্ধ মৌলবাদীরা ভয়াবহ সহিংসতা চালিয়েছে। এরফলে অন্তত ১ লাখ রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আশ্রয় শিবিরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
একটি নৌকাডুবিতে বহু রোহিঙ্গা মারা গেলে চলতি মাসে এক বিবৃতিতে মার্কিন দূতাবাস রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে। এরপর বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ শেষে একজন বিক্ষোভকারী দূতাবাসের একজন কর্মকর্তাকে একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন- ‘রোহিঙ্গা শব্দের ব্যবহার আর নয়।’ ‘আবারো বললে মার্কিন দূতাবাস বন্ধ করে দেয়া হবে’ এবং ‘যারা এসব ভুয়া শব্দ আবিস্কার এবং ভুয়া আদিবাসী জনগোষ্ঠী বলে তারা আমাদের শত্রু, আমাদের শত্রু।’
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের এবং সাধারণভাবে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে দেশটির বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা। আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ জানালেও কয়েক দশক ধরে মিয়ানমার শাসন করা সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের দুর্দশা বৃদ্ধিতে উল্টো সহায়তা করেছে।
মিয়ানমারের নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী নেত্রী অং সান সুচির নতুন সরকারও রোহিঙ্গাদের ভাগ্যোন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এতে সারা বিশ্বের মানবাধিকারকর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
২৯ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস