সোমবার, ০২ মে, ২০১৬, ১২:৩০:৩১

ভিখারিনীর ট্র্যাঙ্কে ২ কোটি রুপি!

ভিখারিনীর ট্র্যাঙ্কে ২ কোটি রুপি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভিখারিনির মৃত্যুর পর চাঁদা তুলে সত্‍কা করেছিলেন প্রতিবেশীরা। পরে মৃতার ঘর থেকে উদ্ধার হয় দু' কোটি টাকর ফিক্সড ডিপোজিট। বিপুল অর্থের সঠিক উত্তরাধিকারীর খোঁজ করছে ব্যাঙ্ক। থবর ইন্ডিয়াটাইমসের।

বহু বছর আগে ভারতের রাজস্থানের আজমীরের নাল্লা বাজার এলাকার স্থানীয় মন্দির চত্বরের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন নিঃসন্তান প্রেমনারায়ণ ও কনকলতা। তারা নিঃসন্তান ছিলেন। বছর খানেক আগে অসুস্থ হওয়ার পর সরকারি হাসপাতালে প্রেমনারায়ণের চিকিত্‍সা হয়। সেই সময় হাসপাতালে দিন-রাত পড়ে থাকতেন বৃদ্ধা কনকলতা। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতেও দেখা গিয়েছে। প্রতিবেশীরা জানতে পারেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। প্রতিবেশীদের কাছে ভিক্ষা করে কোনও মতে তাঁর দিন গুজরান হত।

গত বৃহস্পতিবার ৭০ বছর বয়সে বৃদ্ধা মারা যান। তার সত্‍কারের জন্য চাঁদা তুলে অর্থ সংগ্রহ করেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু তার পবরই চমক! বৃদ্ধার ঘর থেকে উদ্ধার হয় দুই কোটি টাকা মূল্যের ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজপত্র। পুলিশের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে সেই সমস্ত কাগজ জমা দেওয়া হয়। কিন্তু বৃদ্ধার কোনও উই না থাকায় এবং তাঁর কোনও সন্তান না থাকায় সমস্যায় পড়ছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। আপাত ওই টাকার প্রকৃত উত্তরাধিকারীর সন্ধানে রয়েছে ব্যাঙ্ক।

প্রতিবেশী রাজু মিশার জানিয়েছেন, 'নাল্লা বাজারের ঘুপচি ঘরে ভিখারিনির মতো দিনযাপন করতেন বৃদ্ধা। মন্দির চত্বরে তাঁর ঘরের ভিতর ঢুকলে অভাবের প্রকট চিহ্ন দেখতে পাওয়া যেত।' তার প্রতি করুণাবশত স্থানীয়রা খাদ্য ও পোশাকের ব্যবস্থা করেন। দিন দুয়েক আগে কনকলতার ঘরে খোঁজ নিতে গিয়ে তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান প্রতিবেশীরা। চাদা তুলে তার পারলৌকিক কাজ সম্পন্ন করা হয়।

বৃদ্ধার মৃত্যুর পর মন্দিরের প্রধান পুরহিত ও কয়েকজন প্রতিবেশী তার ঘর খোলেন। পুরনো আসবাব এবং বহু ব্যবহৃত পোশাকের পর খাটের নীচে থেকে একটি লোহার বাক্স উদ্ধার হয়। বাক্স খুলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। ভিতরে থরে থরে রাখা ছিল নানান ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করা টাকার শংসাপত্র। গুণেগেঁথে দেখা যায়, জমা রাখা টাকার মোট পরিমাণ ২ কোটি। কাগজ উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়।

নাল্লা বাজারের বাসিন্দা মুকেশ জোশি জানিয়েছেন, 'এই সময় হঠাত্‍ ছত্তিশগড় থেকে মৃত দম্পতির এক ভাগ্নে এসে হাজির হয়। এর আগে তাঁকে কখনও দেখা যায়নি। তিনি জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কে জমানো টাকা দিয়ে মৃত আত্মীয়দের স্মৃতিতে একটি মন্দির গড়তে চান। অথচ বেঁচে থাকতে প্রেমনারায়ণ বা কনকলতার খোঁজে তাঁকে আসতে দেখা যায়নি।'

ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তরাধিকারীর দাবি খতিয়ে দেখে তবেই টাকা দেওয়া হবে।

২ মে ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে