আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের সিটি নির্বাচনে প্রথম বারের মত মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মুসলমান সম্প্রদায়ের সাদিক খান। বর্তমানে তাকে নিয়ে পুরো বিশ্বজুড়েই চলছে আলোচনা। ইসলাম প্রধান দেশগুলো এমন একটি সংবাদে বেশ উচ্ছ্বসিত।
এদিকে যাকে নিয়ে এতটা উচ্ছ্বাস, সে কে? তা অনেকেই জানেন না। সাদিক খান মেয়র হওয়ার পর থেকে তার প্রতি আগ্রহ দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যে। জানতে চাচ্ছেন তার অতীত বর্তমান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাকিস্তানের একজন বাস চালকের ছেলে সাদিক খান। তার মা ছিলেন দর্জি। বর্তমানে এমন একজন মুসলিম সন্তান লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসের অংশিদার এটাই বলা যায়।
সাদিক খানের দাদা ও দাদী অবশ্য ভারতে থাকতেন। পরে দেশভাগ হওয়ার পর পাকিস্তানে চলে যায় তাদের পরিবার। যদিও সাদিক খানের জন্মের আগেই লন্ডনে চলে যায় তার বাবা মা। সেখানে গিয়ে বাবা বাসচালক, আর মা দর্জির কাজ শুরু করেন। ছোটো থেকেই দারিদ্রতার সঙ্গেই বড় হয়েছেন সাদিক। এখন তিনি ব্রিটেনের মেয়র।
তবে এই জয়ের পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না ৪৫ বছরের সাদিক খানের কাছে। নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়েছিল ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল। তাকে তথাকথিত ‘সন্ত্রাসী’ তকমা দেয়ারও চেষ্টা করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। কিন্তু লন্ডনবাসী ওইসব অপপ্রচারে কান দেয়নি। ফলে রেকর্ড পরিমাণ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন সাদিক খান।
শুক্রবার মধ্যরাতে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে দেখা যায়, মোট ১ কোটি ৩১ লাখ ১৪৩ ভোট পেয়ে লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সাদিক খান। তার আগে লন্ডনের কোনো মেয়র এতো পরিমাণ ভোট পাননি। মোট ভেটের ৫৭ ভাগ পেয়েছেন সাদিক খান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোল্ডস্মিথ পেয়েছেন মাত্র ৪৩ ভাগ ভোট। এই বিজয়ের ফলে লন্ডনের সিটি হলে কনজারভেটিভ দলের আট বছরের শাসনের সমাপ্তি ঘটল।
লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় সাদিক খানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন লেবার দলের নেতা জেরেমি কোরবিন। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করার আগেই টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘অভিনন্দন সাদিক খান। আমি আপনার সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি। আমরা সবাই মিলে লন্ডনকে সকলের জন্য কল্যাণকর শহর হিসেবে গড়ে তুলব।’
৭ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন