মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬, ০৮:২৩:১৮

মার্কিন নীতিতে এখনো পরিবর্তন আসেনি : সুইস ব্যাংক

মার্কিন নীতিতে এখনো পরিবর্তন আসেনি : সুইস ব্যাংক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের সঙ্গে এশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্কের বিরাট সম্ভাবনা দেখা দিলেও বিশ্বের বৃহৎ আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকগুলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে ব্যাপক আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। বিশ্বের বড় বড় ব্যাংকগুলো ইরানের সঙ্গে লেনদেন শুরু করতে আগ্রহী হলেও আমেরিকা ফের ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে পারে এমন আশঙ্কায় তারা কাজ শুরু করা থেকে বিরত রয়েছে।

এদিকে বিরাজমান উদ্বেগ দূর করার জন্য মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বের ১৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তারা নির্ভয়ে তাদেরকে ইরানের সঙ্গে লেনদেন শুরু করার কথা বলেছেন।

তবে আল মনিটর বার্তা সংস্থা এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বের ১৫টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করলেও এতে কোনো লাভ হয়নি।

ইউরোপীয় সরকারগুলো যদিও বর্তমান শতাব্দীতে ইরানের মতো অন্যতম বৃহৎ ও লোভনীয় বাজারে প্রবেশের জন্য অর্থ লগ্নিকারী কোম্পানীগুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছে কিন্তু পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ব্যাপারে আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর ফলে ইরানের বাণিজ্য শরীকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মনিটরের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডের দু’টি ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ইউবিএস ব্যাংকের মুখপাত্র জর্জ রুজেনবার্গ আল মনিটরকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে তাদের কোনো আর্থিক লেনদেনের পরিকল্পনা নেই।

তিনি আরো বলেছেন, ইরানের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন শুরু করা কিংবা দেশটির ওপর আরোপিত সীমাবদ্ধতা তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে মার্কিন নীতিতে এখনো কোনো পরিবর্তন আসেনি।

ব্রিটেনের ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন বিবিআই এর আগে বলেছে, ইরানের সঙ্গে লেনদেন শুরু করার ক্ষেত্রে মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আরো বেশি স্বচ্ছতা ও নিশ্চয়তা পাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

এ বিষয়ে স্কাই নিউজ সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলেছে, ব্রিটেনের ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন এ ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছেছে যে, ইরানের সঙ্গে ব্যাংকিং লেনদেন শুরু করার জন্য দেশটির ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা তদন্ত করে দেখার জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হবে। স্কাই নিউজ চ্যানেল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনের বিশেষ বাণিজ্যিক প্রতিনিধি লর্ড লামুন্তের ইরান সফরের কথা উল্লেখ করে বলেছে, ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞার কারণে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালির চাইতে ব্রিটেন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপের বৃহৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ইরানের সঙ্গে কাজ শুরু করার বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে। এ কারণে ইউরোপের বড় বড় কোম্পানি ও ব্যক্তিত্বরা এখনো ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। এ অবস্থায় পরমাণু সমঝোতার পর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়টি কতদূর অগ্রগতি হয়েছে তা তদন্তের জন্য ইরানের কূটনীতিকদের তৎপর হওয়া জরুরী। কারণ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নেয়ার ওপরই আর্থিক লেনদেন ও বাণিজ্য সম্পর্ক শুরু করার বিষয়টি নির্ভর করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতাকে কার্যত হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে এবং জাতিসংঘের উচিৎ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী এ সমঝোতা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়া।-প্যারিস টুডে
১০ মে, ২০১৬ এমটিনিউজ/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে