শুক্রবার, ১৩ মে, ২০১৬, ১১:৩৭:৩৫

বজ্রপাতে আহত হওয়ার এক করুণ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন বড় ভাই

বজ্রপাতে আহত হওয়ার এক করুণ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন বড় ভাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যে ছবি দুটি দেখছেন এদের মধ্যে বজ্রপাতে বেঁচে যাওয়া এক বড় ভাই।  ছোট ভাই বজ্রপাতে মারা গেছে।  তবে ইতিহাসটা বেশ পুরনোই।  বজ্রপাতে আহত হওয়ার সেই করুণ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তিনি।

 
১৯৭৫ সালের ছবি এটি।  বজ্রপাতের ঠিক আগ মুহূর্তে দুই ভাইয়ের চুলের অবস্থা এমনটাই হয়ে গিয়েছিল।  যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে ঘটেছিল এমন ঘটনা।  বজ্রপাতের শিকার হয়ে এদের মধ্যে ১৮ বছরের বড় ভাই বেঁচে গেলেও মারা যায় তার ১২ বছরের ছোট ভাইটি।

বজ্রপাত যখন আছড়ে পড়ে তার ঠিক আগ মুহূর্তে সেখানে থাকা মানুষের চুলগুলো এভাবেই উপরের দিকে উঠে যেতে চায়।  এটাই ওই প্রাকৃতিক দুর্যোগটির শেষ সতর্কতা।  

১৯৭৫ সালের ২০ আগস্ট এ নিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি নিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।  দুই ভাইয়ের মধ্যে যে ভাইটি বেঁচে আছে তার নাম ম্যাক কুইলেন।  বর্তমানে তার বয়স ৫৬ বছর।

সে সময়ের কথা স্মরণ করে ম্যাক কুইলেন বললেন, ক্যালিফোর্নিয়ার সিকোইয়া ন্যাশনাল পার্কের মরো পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছিলেন তিনি।  সঙ্গে ছিল ছোট ভাই সিন, বোন মেরি এবং বন্ধু মারজি।

তিনি বললেন, চূড়ায় ওঠার পরই বুঝতে পারলেন আবহাওয়া খারাপ হয়ে আসছে এবং তাদের চুলগুলো খাড়া হয়ে যাচ্ছে।  এমন সময়ে কৌতুহলবশত নিজের কয়েকটি ছবি তুলে নেয় মেরি।

ম্যাক কুইলেন তার ব্লগে লিখেন, তিনি বাতাসে তার বাহু তুলে ধরেন।  খুব জোরে বজ্রপাতের শব্দ হয়। হঠাৎ করেই স্থানটির তাপমাত্রা কমে যেতে থাকে। উজ্জল আলোর মতো কিছু একটা সব গ্রাস করে নিয়ে গেল।  এরপরই মনে হলো,সময় কমে আসছে। নিজেকে ওজনহীন মনে হতে থাকে ম্যাক কুইলেনের।

এ অবস্থার মধ্যে তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আসেন কুইলেন।  এমন সময় মনে পড়ে ছোট ভাইয়ের কথা। বজ্রপাতের স্থানটিতে স্থির হয়ে আটকে আছে তার ছোট ভাই সিন।

 কুইলেন লিখেন, সিন পুরোপুরি বিধ্বস্ত অবস্থায় ছিল।  ওর দুটি হাটু জড়োসড়ো হয়ে গিয়েছিল।  পিঠ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল।  আমি ছুটে গিয়ে তার শ্বাস-প্রশ্বাস পরীক্ষা করলাম।  দেখলাম, ও তখনো জীবিত।

সঙ্গে সঙ্গে নিচে নামিয়ে আনেন কুইলেন।  সিনের শরীরের তিনভাগের একভাগ পুড়ে গেছে।  শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো যায়নি সিনকে।

এদিকে কুইলেনের নিজের শরীরটাও পুড়ে গিয়েছিল। হঠাৎ করেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি।  দীর্ঘ ছয় মাস কোমায় থেকে জ্ঞান ফিরে তার।  ততদিনে অনেক কিছুই বদলে গেছে।

কুইলেন বললেন, ওই বজ্রপাত আমাকে কিংবা আমার ভাইকে কোনো ‘সুপার পাওয়ার’ দেয়নি।  তবে এক ধরনের সম্মান দিয়েছে।  এমন একটা মুহূর্তের সাক্ষী আমি।  আর কখনোই কোনো পাহাড়ে চড়ার ইচ্ছা নেই আমার।

এক জরিপে দেখা যায়, ১৯৮২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর গড়ে ৫৪ জন লোক বজ্রপাতে মারা যায়।  পরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ বিষয়ে শিক্ষার প্রসার ঘটায় এবং নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে।  

দেশটিতে ২০১১ সালের পর থেকে প্রতিবছর গড়ে ২৬ জন লোক মারা যায়।
১৩ মে,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে